কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীরে সুন্দরী খালের মোহনায় ফেরির অলস পন্টুন রাখায় ব্যাহত হচ্ছে নৌকা চলাচল। এতে খালের তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা বোয়ালখালী উপজেলার একাধিক শিল্প কারখানায় নৌপথে মালামাল পরিবহনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক পথে নিতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খাতে বেড়েছে দ্বিগুণ ব্যয়।
এ বিষয়ে গত ৩ নভেম্বর সুন্দরী খালের মোহনা থেকে ফেরির পন্টুন সরানোর অনুরোধ জানিয়ে চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে আবেদন করেন মীর বনস্পতি প্রোডাক্টস’র ব্যবস্থাপক তাজুল ইসলাম।
এই আবেদনের আলোকে গত ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানিয়েছেন, কালুরঘাট ফেরিঘাটের পূর্ব পাড়ে স্থিত পন্টুন অন্যত্র স্থানান্তর করা সম্ভবপর নয়।
এ বিষয়ে ওই পত্রে আরও জানানো হয়, আবেদনের প্রেক্ষিতে সওজের চট্টগ্রাম কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সওজের সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর মতামত চাওয়া হয়। এতে সওজের দুই প্রকৌশলী মতামত দিয়েছেন যে. কালুরঘাট ফেরিঘাটের উভয় পাড়ে উপযুক্ত জায়গা স্বল্পতার কারণে উক্ত ফেরি ও পন্টুনটি কালুরঘাট ফেরিঘাটের পূর্ব পাড়ে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কর্ণফুলী নদীতে নিয়মিত জোয়ার ও ভাটা হয় এবং নদীতে ভাটার কারণে যখন নদীর পানির স্তর নিচে নেমে যায় তখন ফেরিঘাটের ফেরি ও পন্টুনের অনেক নিচে পানির স্তর নেমে যায়। তাই মাটির উপর পল্টুন এবং ফেরি আটকে থাকে, সেহেতু ফেরি ও পল্টুনটি অন্যত্র সরিয়ে রাখা হলে শক্ত পাথর ও মাটির সংস্পর্শে বা আঘাতে ফেরি এবং পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এমতাবস্থায় কালুরঘাট ফেরিঘাটের পূর্বপাড়ে রক্ষিত পন্টুনটি অন্যত্র রাখার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায়, নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ ফেরি পারাপার কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
এছাড়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পন্টুন সরানো ঝুঁকিপূর্ণ ও সরকারি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে জানিয়ে মতামত প্রদান করেছেন। মীর বনস্পতি প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপক তাজুল ইসলাম বলেন, সওজ কর্তৃপক্ষ চাইলে পন্টুনটি খালের মোহনা থেকে সরিয়ে নৌকা চলাচলের পথ সুগম রাখতে পারে। আমরা আবেদন করেছিলাম। তবে সুরাহা পেলাম না।
তিনি জানান, কালুরঘাট সেতুর দক্ষিণ পাশে মীর বনস্পতি প্রোডাক্টসের ক্রুড অয়েল বোঝাই জাহাজ নোঙর করা হয়। জাহাজ হতে ক্রুড অয়েল আনলোড করা হয়। কিন্তু কর্ণফুলী নদীর সংযুক্ত সুন্দরী খালের মোহনায় সওজের পন্টুন রাখায় জাহাজ নোঙর করতে অসুবিধা হচ্ছে। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ আগস্ট কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজের জন্য চালু করা হয় ফেরি সার্ভিস।
প্রথমে তিনটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করলেও বর্তমানে ৫টি ফেরি রয়েছে। গত বছরের ১ নভেম্বর সংস্কারকাজ শেষে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় কালুরঘাট সেতু। তবে ভারী ও ৮ ফুট উচ্চতার অধিক আকারের পরিবহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা দেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ভারী ও অধিক উচ্চতার যানবাহন ফেরি দিয়ে পারাপার করছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, ফেরিঘাটে খুব একটা যানজট নেই। একটি ফেরি দিয়েই পারাপার হচ্ছে কাভার্ডভ্যান, বাস ও ট্রাক। অপর ফেরিগুলো ও পন্টুন অলস পড়ে রয়েছে নদীর পূর্ব পাড়ে এবং সুন্দরী খালের মোহনায়।
পূর্বকোণ/ইব