চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়ন করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিং রোড প্রকল্পে ‘দুর্নীতি’ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য প্রথমবারের মতো সিডিএ কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদকের টিম। গতকাল বুধবার দুই প্রকল্পের বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করেন দুদকের কর্মকর্তারা।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেতনের বাইরে প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত ভাতা এবং লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আউটার রিং রোড প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল দুদকের কাছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগে ফাটল, প্রয়োজনের অতিরিক্ত র্যাম্প, রেলিং, নাট-বল্টু ঠিকমতো না লাগানো, প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে- এ ধরনের অভিযোগ ছিল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ক্ষেত্রে। এছাড়া, সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আউটার রিং রোড প্রকল্পে সিডিএর আট কর্মকর্তা অতিরিক্ত ভাতা নেওয়ার অভিযোগ ছিল।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাঈদ মাহমুদ ইমরান বলেন, ‘আমাদের প্রধান কার্যালয় থেকে সিডিএতে অভিযান পরিচালনা করার জন্য বলা হয়েছিল। অভিযোগ মূলত দুটি প্রকল্পে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। এটার নির্মাণ কাজে অনিয়ম, বিশেষ করে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগে ‘যেখানে সেখানে’ ফাটল দেখা যাচ্ছে। ‘যেখানে সেখানে’ র্যাম্প করা হয়েছে। রেলিং এ ঠিকভাবে নাট-বল্টু লাগানো হয়নি। প্রয়োজনের বেশি অর্থ এখানে ব্যয় করা হয়েছে। এ ধরনের বেশকিছু অভিযোগ আমাদের কাছে ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা হচ্ছে চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্প, যেটা সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত গিয়েছে। ওটার বিষয়ে অভিযোগ ছিল সিডিএর আটজন কর্মকর্তা সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ হচ্ছে উনারা সিডিএ থেকেও বেতন নিচ্ছেন আবার ওই প্রকল্প থেকে বেতনের ৪০ শতাংশ ভাতা নিচ্ছেন, যেটা আসলে অনেক টাকা।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করলে মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা দেড় হাজার টাকা পান। উনারা যে ৪০ শতাংশ ভাতা নিয়েছেন সেটা কীভাবে নেওয়া হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা (সিডিএ) সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি নিজেও বলেছেন এখানে কিছু অনিয়ম আছে। ওই দুটি প্রকল্পের যাবতীয় নথিপত্র আমরা নিয়েছি। কিছু রেকর্ড পাইনি। কালকের মধ্যে সেগুলো আমাদের দিতে বলেছি। সব পেলে আমরা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ঢাকায় দাখিল করব।’
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম বলেন, সিডিএ’র দুটি প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে দুদকের একটি টিম আসে। তারা এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে। বেতনের বাইরে প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত ভাতার বিষয়ে জানতে চেয়েছে তারা।
পূর্বকোণ/পিআর