জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে চট্টগ্রাম নগরীর ৩৬ খালের বিভিন্ন অংশে দেওয়া বাঁধ অপসারণ শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে খালের বিভিন্ন পয়েন্টে দেওয়া এসব বাঁধ অপসারণ শেষ হলে পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে কর্ণফুলী নদীতে নেমে যাবে। আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বাঁধ থাকার কারণে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও গলিতে নালার পানিতে সয়লাব হয়ে ভোগান্তি পড়ে মানুষ।
নগরীর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমাতে বেশ কিছু উদ্যোগ ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এর মধ্যে ৩৬ খালকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ করছে তারা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৩৬ খালের মধ্যে ২৫ খালের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া, বাকলিয়া, বির্জা, চাক্তাই, চাক্তাই ডাইভারশন, মির্জা-এই পাঁচটি খালে প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রামপুর, জামালখাল, মির্জা এক্সটেনশন খালে ৫০ শতাংশের কম কাজ হয়েছে। যা আগামী বছর কাজ শেষ হবে। অন্যদিকে, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে হিজড়া খালের কাজ করা সম্ভব হয়নি। এই খালের কাজ মাত্র ১০ ভাগ শেষ হয়েছে।
জানতে চাইলে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আমরা কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। ৩৬ খালকে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে খালের গুরুত্ব বিবেচনা করে কাজ করছি। ৩০ এপ্রিলের পর খালে যাতে বাঁধ না থাকে, সে ব্যাপারে ইতোমধ্যে ঠিকাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে যে কয়েকটি খালের কাজ শেষ পর্যায়ে বা যে সব খালে বাঁধ রাখতে হবে, সেখানে পানি চলাচলের ব্যবস্থা রেখে কাজের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
গতকাল চাক্তাই খাল সংলগ্ন বাকলিয়া ইসহাক সওদাগর পুল এলাকায় দেখা যায়, খালে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের সুবিধার্থে দেওয়া বাঁধ অপসারণের জন্য এস্কেভেটর রাখা হয়েছে। প্রকল্পের কাজে ব্যবহার করা শিট ফাইল খাল থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। ইসহাক পুলের উভয় পাশে এস্কেভেটর রাখা হয়েছে। এসব গাড়ি খালের বাঁধ অপসারণের জন্য আনা হয়েছে। আজ বুধবার থেকে সেখানে বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু হবে।
এদিকে বর্ষায় নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে সিডিএ’র প্রকল্পের ৩৬ খালের বাইরে বাকি ২১ খাল খনন ও ড্রেন পরিষ্কারের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, আসন্ন বর্ষায় যাতে নগরবাসী বিগত বছরগুলোর মত জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে না পড়ে সেজন্য চসিকের পক্ষ থেকে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। ৩৬ খালের বাইরে ২১ খাল খনন ও পরিষ্কার করা হচ্ছে। এছাড়া মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
পূর্বকোণ/জেইউ