যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ থেকে মাইক ওয়াল্টজকে সরিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে আপাতত সেই দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প।
রয়টার্স লিখেছে, গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর তার নিজের বলয়ে এটাই প্রথম বড় পরিবর্তন। অবশ্য ওয়াল্টজকে একেবারে বিদায় করে দেননি ট্রাম্প। তাকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করার কথা তিনি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ট্রুথ সোশালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে সামরিক পোশাকে, কংগ্রেসে এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তিনি আমাদের দেশের স্বার্থকে সবসময় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। আমি নিশ্চিত, নতুন দায়িত্বেও তিনি একই রকম নিষ্ঠা দেখাবেন।
হোয়াইট হাউজ সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো আগেই ওয়াল্টজের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাওয়ার খবর দিয়েছিল।
রয়টার্স লিখেছে, তার জায়গায় রুবিওর দায়িত্ব পাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ দশক পর যুক্তরাষ্ট্রে কেউ একইসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ পেল। এর আগে ১৯৭০-এর দশকে হেনরি কিসিঞ্জার একাই ওই দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ট্রুথ সোশালে ট্রাম্প বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন এবং একইসঙ্গে পররাষ্ট্র দপ্তরে তার শক্তিশালী নেতৃত্ব অব্যাহত থাকবে। আমেরিকা এবং বিশ্বকে আবার নিরাপদ করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব।
এই রদবদলের অংশ হিসেবে ওয়াল্টজের ডেপুটি অ্যালেক্স ওয়ংও সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র। ফ্লোরিডার সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ওয়াল্টজ সম্প্রতি সরকারি কাজে অনিরাপদ পদ্ধতিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে হোয়াইট হাউজের ভেতরেই সমালোচনার মুখে পড়েন।
ম্যাসেজিং অ্যাপ সিগনালে ওই গ্রুপটি তৈরি করেছিলেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াল্টজ। অসাবধানতাবশত ওই গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল ওই সাংবাদিককে। বিষয়টি ‘সিগনালগেট’ কেলেঙ্কারি নামে পরিচিতি পায়। ৫১ বছর বয়সী ওয়াল্টজ নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর এক এক্স পোস্টে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমাদের মহান দেশের সেবায় যুক্ত থাকতে পেরে আমি গভীরভাবে সম্মানিত।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত পদে ওয়াল্টজের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগে সেনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
বিবিসি লিখেছে, সেনেটের শুনানিগুলো হয় দীর্ঘ এবং কঠিন। সেখানে প্রার্থীদের নানা প্রশ্নে জর্জরিত করা হয় যাচাই করার জন্য। পেশাগত ভুলত্রুটি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত নানা বিষয়ও শুনানিতে সামনে চলে আসে।
সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বিবিসিকে বলেছেন, সিগনালগেট কেলেঙ্কারি মাইক ওয়াল্টজের মনোনয়ন শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
পূর্বকোণ/ইবনুর