চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

টেকনাফ সংবাদদাতা

১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:৩৭ অপরাহ্ণ

মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জের ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে টেকনাফের কোনো নৌযান যেন বাংলাদেশ জলসীমা ছাড়িয়ে মিয়ানমারের জলসীমায় না যায় সেজন্য বিশেষ সতর্কতা নেয়া হয়েছে। এই নৌরুটে জরুরি প্রয়োজনে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করবে কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায়।

 

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন জানান, বিগত সরকারের সময় থেকেই নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ আছে। এখনো নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। তবে সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলার যাতায়াত করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই যেন সেগুলো বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে মিয়ানমারের কাছাকাছি না যায় সেজন্য বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।

 

টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুটে কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় যাত্রীবাহী নৌযান চলবে। এজন্য সব ধরনের নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার পরও বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছানো হয় বিশেষ ব্যবস্থায়। কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সেদিন সেন্টমার্টিন যায় সাতটি পণ্যবাহী ট্রলার।

 

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, মিয়ানমারে এমন পরিস্থিতিতে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশের সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতার পাশাপাশি টহল জোরদার করেছে।

 

টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে গত এক বছর ধরে। রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ আরাকান আর্মির হাতে যাওয়ার পর বন্ধ ছিল সব ধরনের গোলাগুলির শব্দ। তবে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকে আবারও ওপার থেকে ভেসে আসছে গুলির শব্দ। গত ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সেখানকার জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকার আর্মি (এএ)। তারপর নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে নৌচলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় এএ।

 

এরপরই গত বুধবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আরাকান আর্মি মিয়ানমারের মংডু শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর বন্ধই ছিল ওপার থেকে ভেসে আসা বিস্ফোরণের শব্দ। তবে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গত সোমবারের পর ওপার থেকে কোনো শব্দ শোনা যায়নি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত আবার গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা আগের মতো বিকট না। ধারণা করা হচ্ছে, স্থলভাগে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বা তাদের সমর্থিত আত্মগোপনে থাকা রোহিঙ্গা গোষ্ঠি দ্বারা এমন গোলাগুলি হতে পারে।

 

সাবরাং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. শরীফ বলেন, শাহপরীরদ্বীপের জালিয়াপাড়ার পূর্বে মিয়ানমারের মগনীপাড়া, পাতুংজা পাড়া, সাবারংয়ের আচারবুনিয়া এলাকার পূর্বে মিয়ানমারের সুধাপাড়া, উকিল পাড়া, সিকদার পাড়া, ফয়েজীপাড়া এলাকা থেকে আসছে এসব গোলাগুলির শব্দ।

 

পূর্বকোণ/কাশেম/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট