ট্রেনের অনলাইন টিকিট পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা এবং সুবিধা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের রুট রেশনালাইজেশন এবং ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরিবর্তনের কথা জানান তিনি।ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আজকে একটা প্রেজেন্টেশন হয়েছে। সেখানে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। রেলের টিকিট পদ্ধতি নিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চালডালের নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলী, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর ফিজার আহমেদ ও আনিকা জারা— ওনারা আজ ছিলেন। তারা বিভিন্ন বিষয় জানিয়েছেন। ওনারা সবাই ভালো কম্পিউটার এক্সপার্ট। আমাদের মাথায় কিছু নেই। মাথায় কিছু থাকলে তো মানুষ রাস্তায় গুলি খেতো না। হাসপাতালে যেতো না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের প্রেজেন্টেশনে দেখা গেলো, কমলাপুর থেকে টিকিট চাইলেন সেখানে নেই। কিন্তু তেজগাঁও থেকে আছে। আবার ৭টার ট্রেনে টিকিট নাই কিন্তু ১০টার ট্রেনে আছে। তবে সেটির কী অবস্থা তা জানা যাচ্ছ না।’
ট্রেন থেকে মৌখিকভাবে টিকিট বন্ধ করা রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেলে অনেকেই কর্মকর্তা আছেন। এখানে কাজ করেন। কিন্তু এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এটা জনগণের সম্পত্তি। রেলের সচিব, মন্ত্রীর জরুরি কাজ আছে বলে অন্যদের নাই এমনতো না।’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেশটাকে সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই। মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে এখন থেকে। আবার বিভিন্ন স্টেশন থেকেও টিকিট বরাদ্দ আছে। এখন সেটা এক স্টেশনে বিক্রি না হলে অন্য স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। সেটাও ‘সহজ’কে বলা হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেখা গেলো অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায় না। কিন্তু কালোবাজারে ২০০ বা ৩০০ টাকায় টিকিট পাওয়া যায়। এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।’
যারা কালোবাজারি করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা রেলের লোক তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেবো। আমরা সমস্যার গোড়ায় যেতে চাই। সবাই বলে এই সরকার কিছু করে না। কিন্তু এটা সময় লাগবে। আমরা গত একমাসে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট লোকোমোটিভ কোচ নাই। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
রেলের রুট রেশনালাইজেশন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানে যাত্রী নাই সেখানে ট্রেন যাচ্ছে। আবার যেখানে যাত্রী আছে সেখানে ট্রেন নাই। প্রবাসীরা যেসব জায়গা যায় যেমন- ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম এসব রুটে আলাদা ব্যবস্থা নেবো।’
তিনি বলেন, ‘রেলের প্রকল্পগুলো নিয়ে রিভিউ চলছে। অনেক প্রকল্প আগে হয়েছে যেগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ। সামনে রেলের প্রকল্প নিয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক আছে। আমরা সামনে বসবো। কোন প্রকল্প কেন বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা আমরা জানাবো।’
তিনি ঠিকাদারের বিষয়ে নিয়ে বলেন, ‘এখন আর আগের মতো পরিবেশ নাই। যেকেউ বিড করতে পারে। সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে। এখন গিয়ে দেখি— দুই-তিনজন ঘুরেফিরে কাজ পাচ্ছে। এটা আর হবে না। সবাই কাজ পাবে। রেল ও সড়ককে সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
পূর্বকোণ/আরআর