১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে ঘাতকেরা মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, তাঁর লালিত সোনার বাংলা এমনকি যে আগস্ট মাসকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল, সেই আগস্ট ‘শোকের মাস’ হিসেবে পালিত হয় বাংলার মানুষের হৃদয়ে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, সহোদর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, কৃষকনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বেবী সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, সাংবাদিক শহীদ সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আব্দুল নঈম খান রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে ঘৃণ্য ঘাতকরা হত্যা করে। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল এবং কর্তব্যরত পুলিশের বিশেষ শাখার এএসআই সিদ্দিকুর রহমান নিহত হন। ঘাতকদের কামানের গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে একটি পরিবারের বেশ কয়েকজন হতাহত হন।
১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের যুবক যারা আছে, তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্রসমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।’
গবেষকরা বলছেন, সপরিবারে হত্যার পরে পুরো দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চালানো হলেও সেটি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে করতে পারেনি ঘাতকেরা। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার পথে পাড়ি দেন দীর্ঘ সময়।
পূর্বকোণ/মাহমুদ