চট্টগ্রাম শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

সর্বশেষ:

দৃষ্টি সবার লন্ডন বৈঠকে
ফাইল ছবি

দৃষ্টি সবার লন্ডন বৈঠকে

মোহাম্মদ আলী

১৩ জুন, ২০২৫ | ১২:১৮ অপরাহ্ণ

সবার দৃষ্টি এখন লন্ডন বৈঠকে। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টার ‘ওয়ান টু ওয়ান’ এ বৈঠক হবে। লন্ডনে ডরচেস্টার হোটেলে বৈঠকটি হবে রুদ্ধদ্বার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক এ বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ কারণে বৈঠকের এজেন্ডা নিয়ে জনমনে আরও বেশি আগ্রহ ও উৎসাহ তৈরি হয়েছে।

 

তবে দুই পক্ষের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং ইতোমধ্যে দুই তরফ থেকে এ বিষয়ে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনার প্রধান বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনা। এজন্য সরকার এপ্রিল থেকে সরে এলে, বিএনপিও ডিসেম্বর থেকে সরে আসবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রæয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করাই আলোচনা-সমঝোতার প্রধান বিষয় হয়ে দেখা দিতে পারে।

 

বৈঠকে ভোটের দিন-ক্ষণ, সংস্কার, জুলাই সনদসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কী বোঝাপড়া হয়, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন, রোজার আগে আগামী বছরের ফেব্রæয়ারিতে ভোটের সময় নির্ধারণ করতে পারলে রাজনৈতিক বোঝাপড়া স্বস্তিদায়ক হতে পারে। রাজনৈতিক বোদ্ধারা মনে করেন আসন্ন লন্ডন বৈঠকে হয়তো সরকার এবং বিএনপি’র অবস্থানের মধ্যবর্তী অর্থাৎ ডিসেম্বর বা এপ্রিল নয়, ফেব্রæয়ারিতে নির্বাচনের প্রশ্নে সমঝোতা হতে পারে।

 

লন্ডন বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনের বৈঠকের সিদ্ধান্তটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। পুরো জাতি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি এ বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বৈঠক থেকে একটা সুনিদিষ্ট পথ ও দিক নির্দেশনা জাতি পাবে।

 

এদিকে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে চলমান টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠক ঘিরে দেশ-বিদেশে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও প্রত্যাশা। যুক্তরাজ্যে সফররত অধ্যাপক ইউনূসের সময়সূচিতে এই বৈঠককে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি হতে পারে সঙ্কট সমাধানের সম্ভাব্য ভিত্তি।

 

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শুধু বিএনপি নয়, পুরো জাতি এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে। বৈঠকের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পথ সুগম হবে বলে প্রত্যাশা সবার। সেক্ষেত্রে উভয়দিক থেকেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। তারা বিশ্বাস করতে চান, বৈঠক শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমান হাসিমুখে বেরিয়ে আসবেন। তাদের সেই প্রত্যাশিত হাসিই বলে দেবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী বৈঠকের সমাপ্তি ঘটেছে। অতপর ফলাফল দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বিএনপি।

 

৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে প্রথম বৈঠকের প্রত্যাশা প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ এরশাদ উল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, এ ধরনের হাই ভোল্টেজ বৈঠকের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক কিছু পজেটিভ দিকে যাবে। এটি বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট এবং বিএনপি রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

 

এদিকে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। ওই বৈঠকের নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নেই। তারেক রহমান এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। উনারা যখন বসবেন, তখন বাংলাদেশের এখনকার যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় নির্বাচন, জুলাই চার্টার (জুলাই সনদ) এগুলোর যে কোনো বিষয়ে আলাপ হতে পারে।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট