চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে স্বাগত, হাসিনার গুমে সম্পৃক্ততা তদন্তেও সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১২:২৯ অপরাহ্ণ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি নির্বাচনের সম্ভাব্য যে সময় ঘোষণা করেছেন তাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তদন্তেও সমর্থন জানিয়েছে দেশটি।

 

স্থানীয় সময় বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি স্পোকসপারসন বেদান্ত প্যাটেল এসব কথা বলেন। ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস ঘোষিত নির্বাচনের সময় উল্লেখ করে এক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা দিয়েছে- ২০২৫ সালের শেষে অথবা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচন হতে পারে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী?

 

জবাবে প্যাটেল বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানাই। কেননা শেষ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের জনগণকে ইচ্ছেমতো প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগ দেবে। নির্বাচন এমন একটি বিষয় যেক্ষেত্রে আমরা সময়টাকে পর্যবেক্ষণ করছি। অবশ্যই আমরা এই পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি সম্মানকে উৎসাহিত করতে চাই, যেন পরিবর্তন ফলপ্রসূ হয়। পুরো বিশ্বেই শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র।

 

গুম তদন্ত কমিশনে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা নিয়ে ওই সাংবাদিক জানতে চান- নিউইয়র্ক টাইমস বাংলাদেশের গুম তদন্ত কমিশনের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা বলপূর্বক গুমের বিষয়গুলো তদন্ত করছে। কমিশনের রিপোর্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সম্পৃক্ততা উঠে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এই বিষয়ে আপনার কোন মন্তব্য আছে?

 

জবাবে প্যাটেল বলেন, গত দুই দশকে শত শত বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে- এমন প্রতিবেদনে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জোরপূর্বক গুম গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। কেননা অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক বা নিখোঁজ রাখলে ভুক্তভোগীরা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। তাদের পরিবারও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এসব অপরাধ তদন্তে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে ন্যায্য ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।

 

আরেক সাংবাদিক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ ইস্যুতে কথা হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছেন। জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের উপ-মুখপাত্র বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা সমস্যা, বাণিজ্য সমস্যা, কনস্যুলার সমস্যা এবং ভিসাসহ নানা ইস্যুতে কথা হয়েছে। আমরা জয়শঙ্করের সঙ্গে সেই বৈঠকের কথা আগেই রিড আউটে জানিয়েছি। ভারতের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মূল অংশীদার ছিল বাইডেন প্রশাসন।

 

আরেক প্রশ্নে বাংলাদেশে কথিত ‘হিন্দু নির্যাতন’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন ডিসির সামনে কয়েক হাজার মার্কিন হিন্দুর বিক্ষোভ উল্লেখ করে ওই সাংবাদিক বলেন, কেন আমি বাংলাদেশ ইস্যুটি নিয়ে এসেছি, কারণ হাজার হাজার হিন্দু বাংলাদেশের হিন্দুদের সমর্থনে ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে। গত সপ্তাহেও বিক্ষোভ হয়েছে। ভারত এবং বাংলাদেশেও হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক বাংলাদেশি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তারা ব্লিঙ্কেনকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানাচ্ছেন। কেননা তিনি ভারতে খুব বিখ্যাত। একই সময়ে বিক্ষোভকারীরা অনুরোধ জানাচ্ছেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা জাতিসংঘে যেন যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করছে তাদের জন্য কি আপনাদের কোন বার্তা আছে?

 

জবাবে প্যাটেল বলেন, ওই অঞ্চল আমাদের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভগুলো শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। কেননা বিক্ষোভ সকল মানুষের মৌলিক অধিকার। আমরা সারাবিশ্বে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে মানবাধিকারের বিষয়ে জোর দিতে থাকবো। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও এ বিষয়ে জোর দিয়ে যাবো।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট