ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে অসংক্রামক রোগ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চট্টগ্রামে দিনদিন এর সংখ্যা বাড়ছে। বৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র চমেক হাসপাতালের তথ্য বলছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়াদের বড় অংশই হচ্ছে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীরা। চলতি বছরে হাসপাতালটিতে অসংক্রামক এ রোগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ। অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই হচ্ছেন ৪৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী নারী-পুরুষ। বাকি যে সংখ্যা রয়েছে, তারা সকলেই তরুণ ও যুবক।
তথ্য অনুসারে, চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আওতাধীন হোপ ক্লিনিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ১০ মে পর্যন্ত উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ৩৬৩ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তাদেরমধ্যে ৫৫ শতাংশই হচ্ছে পুরুষ। বাকি ৪৫ শতাংশ হচ্ছে নারী। বয়সের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ৪৫ বছরের উর্ধ্বরা। এ সংখ্যা ৮০ শতাংশ। বয়স ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৭৬ জন। যা ২০ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদেরমধ্যে ১৫ থেকে ৩০ বছরের ১৩ জন তরুণ রয়েছে। যারা বংশগত কারণ ছাড়াও অন্যান্য জটিলতা আক্রান্ত বলে জানান চিকিৎসকরা। এছাড়া ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ হচ্ছেন ৪৫ থেকে ৫৯ বয়সী। যার সংখ্যা ১০৭ জন। ১৫৮ জন হচ্ছেন ৬০ থেকে ৭৪ বছর বয়সী। যা মোট রোগীর ৪২ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাকি ২২ জনের বয়স ৭৫ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে। যা ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
হোপ ক্লিনিকের তত্ত্বাবধানে থাকা চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর্জা নুরুল করিম বলেন, ‘প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে সম্প্রতি উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বংশগত কারণ ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার জন্য মূলত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, কায়িক পরিশ্রম না করা, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন মেনে না চলাই সবচেয়ে বড় দায়ী। এর প্রভাব এখন কম বয়সীদের মধ্যেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কম বয়সী তরুণ ও যুবকরাও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই শুধুমাত্র মেডিসিনের উপর ভরসা না করে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলে এ রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব হবে।’
বছর দুয়েক আগে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে চলা এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি রোগী রয়েছে চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলাগুলোতে। গ্রামের রোগীদের চেয়ে শহরের রোগীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের হার দেড়গুণ বেশি। দেশের ২২টি হাসপাতালের প্রায় দুই হাজার রোগীর মধ্যে চালানো এক গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে আসে।
পূর্বকোণ/এসএ