চট্টগ্রাম রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

সর্বশেষ:

পবিত্র ঈদুল আজহা শনিবার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল আজহা শনিবার

পূর্বকোণ ডেক্স

৫ জুন, ২০২৫ | ১:১৮ অপরাহ্ণ

পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ আগামী শনিবার (৭ জুন)। ইসলামী দিবসসমূহের মধ্যে এদিনের তাৎপর্য অপরিসীম। আরবি ‘কোরবান’ শব্দ থেকে কোরবানি শব্দের উৎপত্তি, যার অর্থ ত্যাগের মাধ্যমে নৈকট্যলাভ করা। পশু কোরবানির মাধ্যমে এ দিনে বান্দা আল্লাহর নৈকট্যলাভে ব্রতী হয়। ফলে মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে দ্বীনি আমেজে প্রাণ স্পন্দন জেগে ওঠে। সবাই সাম্যবাদের মর্মকথা হরহামেশা উচ্চারণ করলেও ঈদুল আজহায় তার বাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে।

 

কোরআন-হাদিসের অসংখ্য জায়গায় কোরবানির গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে ছোট সুরায় বলেছেন, ‘অতএব তুমি তোমার প্রভুর উদ্দেশে নামাজ পড় এবং কোরবানি কর।’-(সুরা আল-কাওসার)

 

পৃথিবীতে ধর্মকর্মের ইতিহাস যত প্রাচীন কোরবানির ইতিহাসও তেমনি যুগ-যুগান্তরে চলে আসছে। সকল উম্মতের এ ছিল এক অমোঘ বিধান। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির এক রীতিনীতি নির্ধারণ করেছি, যেন তারা ওইসব পশুর উপর আল্লাহ পাকের নাম নিতে পারে; যেসব তিনি তাদেরকে দান করেছেন।’-(সুরা আল-হজ: ৩৪)

 

আল-কোরআনে হজরত ইবরাহিমকে (আ.) মুসলিম মিল্লাতের পিতা হিসেবে ভ‚ষিত করা হয়েছে; আর কোরবানি তারই অন্যতম আদর্শ বা সুন্নাত। সুরা আস-সাফফাতের ১০২-১১২নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যখন সে (ইসমাইল আ.) তার সাথে চলাফেরার বয়সে পৌঁছালো তখন একদিন ইবরাহিম (আ.) তাকে বললেন, ‘প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি তোমাকে যেন জবেহ করছি। বলো দেখি কী করা যায়?’ পুত্র নির্দ্বিধায় বললো, ‘আব্বা! আপনাকে যে আদেশ করা হয়েছে তা শীঘ্রই পালন করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে অবিচল দেখতে পাবেন।’

 

অবশেষে পিতাপুত্র উভয়ে আল্লাহর কাছে নিজেদের সোপর্দ করলেন এবং ইবরাহিম (আ.) পুত্রকে উপুড় করে শুইয়ে দিলেন (জবেহ করার জন্য)। তখন আমরা তাকে আহ্বান করে বললাম, ‘ইবরাহিম! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছ।’ আমরা সৎকর্মশীলদের এরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি। বস্তুত, এ এক সুস্পষ্ট অগ্নিপরীক্ষা। আর আমরা বিরাট কোরবানি ফিদয়া স্বরূপ দিয়ে তাকে (ইসমাঈল আ.) উদ্ধার করেছি। আমরা ভবিষ্যতের উম্মতের জন্য ইবরাহিমের এ সুন্নাতকে স্মরণীয় করে রাখলাম। ইবরাহিমের (আ.) উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এভাবে জীবনদানকারীদের আমরা এ ধরনের প্রতিদানই দিয়ে থাকি। নিশ্চিত রূপে তিনি মুমিন বান্দাদের মধ্যে শামিল।

 

এই পবিত্র স্মৃতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ হাজি মক্কাতুল মোকাররমার মিনা প্রান্তরে এবং সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মুসলমান নিজ নিজ এলাকায় পশু কোরবানি প্রদান করেন। আর এভাবেই মুসলিম উম্মাহর কাছে কোরবানি প্রথা অদ্যাবধি চলে এসেছে। এর মধ্য দিয়ে মুসলিমরা তাদের মনের পশুত্বকে বিসর্জন দেন এবং আল্লাহর আদেশের প্রতি ত্যাগ-নিষ্ঠার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট