৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুর বিভিন্ন অংশ ক্ষয়ে গেছে। ফুটো হয়ে গেছে পাটাতন। এ সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে ট্রেন ও অন্যান্য যান চলাচল করে। একমুখী সেতুর একপাশ থেকে যানবাহন পার হওয়ার সময় অপর প্রান্তের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
সেতু সংস্কারের পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে চলতি বছরে। কক্সবাজারে ট্রেন চালুর জন্য সেতুটি ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করছে রেলওয়ে। সংস্কার কাজের জন্য ১ আগস্ট থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কালুরঘাট সেতু। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে রেল কক্সবাজার যাবে বলে রেল মন্ত্রণালয় প্রত্যাশা করছে।
৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ৬৩৮ দশমিক ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের কালুরঘাট সেতু দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল করছে। কালুরঘাট সেতু ট্রেন চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৩১ সালে। এর ৩১ বছর পর ১৯৬২ সালে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। শুরুতে সেতুটি দিয়ে সর্বোচ্চ ১২ টনের গাড়ি পারাপারের অনুমোদন থাকলেও বর্তমানে তা ১০ টন। সেতুতে বিদ্যমান ১৯টি পুরোনো স্প্যানের মধ্যে আটটি স্প্যান নড়বড়ে এবং ক্ষয়ে গেছে। এই নড়বড়ে সেতু দিয়ে চলছিল ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন। কালুরঘাট সেতুতে সমীক্ষা চালিয়ে এসব বিষয় তুলে এনেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা বলেন, কালুরঘাট সেতু সংস্কার ছাড়া কক্সবাজার পর্যন্ত ভারী ইঞ্জিনের ট্রেন চলা সম্ভব নয়। বুয়েটের পরামর্শক দলের পরামর্শে সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেতুর বিদ্যমান রেললাইন সংস্কার করে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হবে। সেতুতে মানুষের চলাচলের জন্য ওয়াকওয়েসহ পুরো কাজ শেষ করতে সময় লাগতে পারে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেললাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।
গত ১ আগস্ট থেকে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এই কয়দিনে সেতুর নিরাপত্তা বেস্টনি কাটার কাজ চলছে। সেতু মেরামতের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সেতু এলাকায় আনা হচ্ছে।
এদিকে, সেতু বন্ধ করে দেওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ ফেরি দিয়ে পারাপার করছেন। জোয়ারের পানিতে ফেরিঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। গত মঙ্গলবার ও বুধবার ফেরি পারাপারে দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
ফেরি পারাপারে ভোগান্তি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সাধারণ) মো. মোজ্জামেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক পত্রে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে এ সংক্রান্ত সরজমিন তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়কে অবহিত করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ