জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুবসংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে আগামী শুক্রবার। ওই দিন বেলা তিনটায় রাজধানীর গুলিস্তানে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হবে। বেসরকারি খাত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ সংগঠনের মূল ফোকাস থাকবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে এনসিপির যুব উইংয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে নতুন এ সংগঠনের বিষয়ে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশের সামনে যে সুযোগ এসেছে, তা প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রে ১০০ থেকে ২০০ বছর পরে আসতে পারে। এখন বাংলাদেশে তরুণেরা প্রায় ৪০ শতাংশের ওপর। দেশের চাকা যদি ঘোরাতে হয়, তবে এই তরুণদের ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য সংগঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে এনসিপির আত্মপ্রকাশের পর জুলাই অভ্যুত্থানের প্রাণভোমরা তরুণদের সংগঠিত করতে তাঁরা কাজ শুরু করেন।
নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি বড় একটি জায়গায় নেতৃত্ব দিয়েছিল। তেমনি দেশকে নতুনভাবে পুনর্গঠিত করতে আমাদের এনসিপির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, ছাত্রশক্তি যেভাবে অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হটিয়ে দেশকে একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, এখন এই দেশকে পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে জাতীয় যুবশক্তি একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। দেশকে নতুন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পুরো বাংলাদেশের তরুণদের একটি ফোর্স প্রয়োজন। আশা করি, জাতীয় যুবশক্তি দেশকে সে জায়গায় নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।’
তরুণদের মধ্যে ফ্রাস্ট্রেশন (হতাশা) রয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক বা ক্রেডিটের ক্ষেত্রে তরুণদের অ্যাকসেস নেই। আমাদের নীতিনির্ধারণী ফোরামেও তরুণদের অ্যাকসেস নেই। আমাদের যে বড় তরুণ জনগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আছেন, তাঁদের নিয়ে জাতীয় যুবশক্তি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে কাজ করে যাবে।’
শুক্রবার (১৬ মে) বেলা তিনটায় গুলিস্তানে শহীদ আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউয়ে বড় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের সামনে ‘জাতীয় যুবশক্তি’ হাজির হবে বলে জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
যুবশক্তির যে কমিটি হবে, সেটির কিছু খসড়া ইতিমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে বলে জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, সেখানে নারীদের অংশগ্রহণ থাকবে, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও হিন্দু ভাইদের অংশগ্রহণ থাকবে। যাঁরা বেসরকারি খাতে রয়েছেন, বেসরকারি ও পাবলিক দুই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরই বড় অংশগ্রহণ থাকবে। এনসিপির যত অঙ্গসংগঠন বা সহযোগী সংগঠন হবে, সবচেয়ে বেশি রিপ্রেজেন্টেশন (প্রতিনিধিত্ব) যুবসংগঠনে থাকবে। এ সংগঠনের মূল ফোকাসের (মনোযোগ) একটা জায়গা হবে বেসরকারি খাত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি চাই না, কোনো লাঠিয়াল বাহিনী চাই না। এনসিপির সরাসরি অঙ্গসংগঠন হিসেবে জাতীয় যুবশক্তি ও জাতীয় শ্রমিক শক্তি কাজ করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়ক (যুব) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ আড়াই মাস কাজ করার পর এনসিপির যুবসংগঠনের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। যুবকদের সাহসী ভূমিকার কারণেই আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সংঘটিত করতে পেরেছি। যুবসমাজের সম্ভাবনার জায়গাগুলো ফোকাস করে আমাদের যুবসংগঠন কাজ করবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভাসহ অন্যরা।
পূর্বকোণ/এএইচ