চট্টগ্রাম বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

তিন কারণে এলপিজি গ্যাসবাহী দুই জাহাজে আগুন

অনলাইন ডেস্ক

১৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

পরপর এলপিজি গ্যাসবাহী জাহাজ দুইটি বিদেশি জাহাজে আগুনের ঘটনায় তিনটি কারণ খোঁজে পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) তদন্ত কমিটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নাবিক ও  দায়িত্বরত ব্যক্তিদের অদক্ষতা, অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে জাহাজে আগুন ধরেছে। এটা কোনো নাশকতা নয়।

এর আগে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার) কমোডর এম ফজলার অন্য সদস্যদের নিয়ে কুতুবদিয়ায় পুড়ে যাওয়ায় ‘এলপিজি সোফিয়া’ জাহাজটি তিন দফা পরিদর্শন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বন্দরের উপ-সংরক্ষক ফরিদুল আলম, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ডিজিএফআই, এনএসআই, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি ও কন্ট্রোলার অব মেরিটাইম এডুকেশনের ক্যাপ্টেন সাঈদ আহমেদ।

প্রসঙ্গত, ১২ অক্টোবর মধ্যরাতে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) ‘ক্যাপটেইন নিকোলাস’ থেকে লাইটার জাহাজ ‘এলপিজি সোফিয়া’য় এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) স্থানান্তরের সময় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

জানা গেছে, দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ছিল ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের নাবিকদের অসতর্কতা ও অবহেলা। সবার আগে এ জাহাজেই আগুন লেগেছিল। গভীর সাগরের কুতুবদিয়ায় এলপিজি সুফিয়া ও ক্যাপটেইন নিকোলাস পাশাপাশি একটি আরেকটির সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। সামনের অংশে পাঁচটি ও পেছনের অংশে পাঁচটি রশি ছিল। হোস পাইপ দিয়ে নিকোলাস থেকে সুফিয়ায় এলপিজি স্থানান্তর করা হচ্ছিল। কিন্তু রাত ১২টা ১০ মিনিটে সামনের অংশের পাঁচটির মধ্যে একটি রশি প্রথমে ছিঁড়ে যায়। পরবর্তী ২০ মিনিটে বাকি চারটি রশি ছিঁড়ে যায়। এতে করে জাহাজ দুটি দূরে সরে যেতে থাকে। টান পড়ে হোস পাইপে। একপর্যায়ে হোস পাইপ ছিঁড়ে গিয়ে গ্যাস লিকেজ হতে শুরু করে। লিকেজ হওয়া এলপিজি গ্যাসে রূপান্তরিত হতে আরও প্রায় পাঁচ মিনিট সময় পায়। ১২টা ২৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তখন পেছনের দিকের পাঁচটি রশিতে আগুন লেগে সুফিয়ায় ছড়িয়ে যায়। আর হোস পাইপ থেকে আগুন ধরে যায় নিকোলাসে। সুফিয়ার নাবিকরা নিকোলাসের ক্যাপ্টেনকে দফায় দফায় জানানোর চেষ্টা করলেও তার সাড়া মেলেনি। ফলে আগুনের মাত্রা বেড়ে যায়। পরে নিকোলাসের আগুন নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দিয়ে নেভানো গেলেও সুফিয়া জাহাজে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত আগুন জ্বলে।

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক বলেন, এখানে জাহাজে কর্তব্যরতদের অসতর্কতা ছিল বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যদি তারা রাত্রিকালীন ডিউটিতে আরও সজাগ ও সতর্ক থাকতেন, তাহলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কিছুটা হলেও এড়ানো যেত। তবে অগ্নিকাণ্ডে কারণ অনুসন্ধানে মানবসৃষ্ট কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলেও জানান ওমর ফারুক।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট