অবশেষে স্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। নগরীর দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায় ২৩ শতক জমি হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১৪ মে (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জমি হস্তান্তর কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে জমির কাগজপত্র ও দখলপত্র হস্তান্তর করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্থায়ী জায়গার অপেক্ষায় ছিলাম। এই বরাদ্দ হাসপাতালের সেবার পরিধি বাড়াতে এবং আধুনিক হৃদরোগ হাসপাতাল নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জমি বুঝে পাওয়ার পরপরই হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে।
চট্টগ্রামে হৃদরোগ সেবা প্রদানের মহান ব্রত নিয়ে ২০২২ সালের ২৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনটি বর্তমানে নগরীর গোলপাহাড় মোড় এলাকায় একটি ভাড়া ভবনে শুধুমাত্র বর্হির্বিভাগের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। হৃদরোগ চিকিৎসাকে আরও সহজলভ্য ও উন্নত করার লক্ষ্যে শুরু থেকেই অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র এবং সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠান।
পরবর্তীতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর এলাকায় ২ দশমিক ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সেখানে আধুনিক কার্ডিয়াক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হয়েছিল। এমনকি ওই জমিতে ভূমি উন্নয়নের প্রাথমিক কাজও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা ও জমি সংক্রান্ত কিছু আইনি জটিলতার কারণে সেই প্রকল্পটি দীর্ঘদিন থমকে থাকে। জমি সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা এবং অন্যান্য জটিলতা নিরসন না হওয়ায় হাসপাতাল নির্মাণ কাজও আর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নতুন করে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অদূরে অবস্থিত কাট্টলী ভূমি অফিসের সাথে লাগোয়া ২৩ শতকের খালি জায়গাটিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরুর কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নতুন হাসপাতালে আধুনিক ক্যাথল্যাব, ওপেন হার্ট সার্জারি ইউনিট, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), সিসিইউ, কার্ডিওলজি এবং কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ স্থাপন করা হবে। দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ সেবার ব্যবস্থাও রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষের হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই একটি পূর্ণাঙ্গ বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রয়োজন ছিল। এই বরাদ্দের মাধ্যমে সে স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পূর্বকোণ/ইবনুর