গণহারে মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেইট পুলিশ বক্সের সামনে জড়ো হয়েছে ১৬ নম্বর চকবাজার থেকে বায়েজিদ সড়কে চলাচলকারী টেম্পো চালকরা। শুক্রবার ৫টার দিকে সড়কের সব টেম্পো পুলিশ বক্সের পাশে পাকিং করে পুলিশ বক্স ঘেরাও করে প্রতিবাদ শুরু করে তারা। এসময় প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় সড়কে গণ পরিবহন সংকটে পড়ে সড়কটিতে চলাচলকরী যাত্রীরা।
বিকাল পাঁচটার সময় চকবাজার ওয়ালী খাঁ মোড়ে কোন টেম্পো না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে প্রায় তিনশতাধিক যাত্রী। এসময ওয়াহিদ নামের এক যাত্রী বলেন, আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাবো রোগীর জন্য খাবার নিয়ে যাবো কিন্তু এখানে সড়কটিতে চলাচলকারী একমাত্র গণ পরিবহন টেম্পোগুলো নাকি বন্ধ করে দিয়েছে চালকরা। সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
চকবাজার থেকে ২ নম্বর গেইটে পুলিশ বক্সের সামনে এসে দেখা যায় প্রায় অর্ধশতাধিক টেম্পো চালক জড়ো হয়ে ট্রাফিক পুলিশের দুই সার্জেন্টকে ঘিরে ধরছে। তার মধ্যে একজনের নাম রায়হান বলে জানা গেছে। এসময় মোহাম্মদ নয়ন নামের এক চালক জানান, আমার গাড়ির নাম্বর ফ ১১-২৬৩৫ দুই নম্বর গেইট এলাকায় দুই থেকে তিনজন সার্জেন্ট কয়েদিন ধরে গাড়ির রোড পারমিট ও ড্রাইভিং লাইন্সেসসহ কাগজ পত্র আপডেট থাকার পরও ‘নো পাকিং’ মামলা দিচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা করে। আজও ৫ থেকে ৭টা গাড়ির চালককে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা কয়দিনে পাঁচ হাজার টাকা আয় করি। দেশে যে অস্থিরতা চলছে তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
মো. হৃদয় নামের এক চালক জানান, আমি টেম্পো ( ফ ১১-১০৬৩) বের করে চকবাজার থেকে ২ নম্বর গেইট তিনতলা মসজিদের সামনে পাকিং করে যাত্রী নামাচ্ছি তখন সার্জেন্ট আমাকে ৫ হাজার টাকার ‘নো পাকিং’ মামলা দিয়েছে। মূলত ‘নো পাকিং’ মামলা দুই হাজার পাঁচশত টাকা। কিন্তু একবার এই মামলা দিলে সেটার টাকা অনলাইনে পরিশোধ করার পরও ২য় বার থেকে নো পাকিং মামলা ডাবল হয়ে যায়। এক দেশে দুই নীতি, ঢাকায় সিএনজি ও মোটর সাইকেলে এই মামলা মাত্র এক হাজার টাকা আর ঢাকার বাইরে আড়াই তিন হাজার টাকার নিচে মামলা নাই।
চালকদের প্রতিবাদের মধ্যে পরিস্থিতি সামল দিতে উপস্থিত হন পাঁচলাইশ এলাকার ট্রাফিক পরির্দশক ( টিআই) মো. কামরুল। তিনি পূর্বকোণ প্রতিবেদককে জানান, চালকরা অভিযোগ করছে আজ অনেকগুলো গাড়িকে মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা এখানে উপস্থিত আছেন। আমি তাদের সাথে আলোচনা করে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় করবো।
নো পাকিং মামলা ৫ হাজার টাকা মানে ডাবল দেখায় কেন এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনারা তো জানেন অনলাইনে যে সফটোওয়ার সমস্যা সেটা হলো যদি একবার কোন চালকের বিরুদ্ধে এই মামলা হয় তাহলে পরবর্তীতে একই অপরাধ করলে আগের আড়াই হাজার পরিশোধ করলেও জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা আসে মেশিনের স্লিপে। এটাতে আমাদের কোন হাত নেই।
১৬ নম্বর অটো টেম্পো ও অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং-১৪৪১) সহ -সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমন বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ আরও পাঁচ মাস থাকলেও গত ৫ আগস্টের পর থেকে কোন কার্যক্রম নেই। চালকরাই নিজেরা নিজেরা সমন্বয় করে লাইন চালাচ্ছে। আজও শুনেছি গণহারে চালকদের মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। দুই নম্বর গেইট এলাকায় দু-একজন সার্জেন্ট এসেছে যারা ইদানিং চালকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ