চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫

সর্বশেষ:

চকরিয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন প্রশাসন

চকরিয়া সংবাদদাতা

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৫:৩৭ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ে বন্ধ করলেন উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে সকালে চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ইসলামনগর এলাকায় কনের বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে চকরিয়া আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত। 

 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ইসলামনগর মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আলিফা জান্নাত তারিনকে তার পরিবার জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলেন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীর বাসিন্দা এক প্রবাসীর সঙ্গে।

বিয়ে উপলক্ষে কনের বাড়িতে চলছিল নানা অনুষ্ঠান আয়োজন। দুপুরের মধ্যে বরপক্ষের লোকজন (বরযাত্রী) কনের বাড়িতে পৌঁছার কথা। এরই মধ্যে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদরাসা শিক্ষার্থী আজ বিয়ের পীড়িতে বসতে যাচ্ছে বলে বিষয়টি জানতে পারেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। তাৎক্ষণিক তিনি চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: নজরুল ইসলামকে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে ঘটনাস্থলে পাঠান। 

 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আমজাদিয়া মাদ্রাসার সুপার ড.এনামুল হক, চকরিয়া থানার এসআই শরীফ আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম নিয়ে কনের বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কনের বাবা মুছলেকা দিয়েছেন মেয়ে প্রাপ্তবয়স না হওয়া পর্যন্ত আর বিয়ে দেবে না বলে অঙ্গীকার করেন।

 

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান রহমান বলেন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ইসলামনগর এলাকায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের স্বীকার হচ্ছে। গোপনে বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে পাঠাই। সেখানে ভিকটিমের পরিবার মেয়েটির প্রাপ্ত বয়সের প্রমাণপত্র দেখাতে না পারায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দেয়া হয়। 

 

তিনি বলেন, মেয়ের পরিবার বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতন না থাকায় অনেকটা লোভে পড়ে প্রবাসী যুবকের সঙ্গে অল্প বয়সে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরে অবশ্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মেয়ের পরিবার বাল্য বিয়ে থেকে সরে এসেছেন। এইধরনের বাল্য বিয়ের প্রবণতা বন্ধে কনের পরিবারের পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাবাসী সবার মাঝে সচেতনতা দরকার। একইসঙ্গে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজে নিয়োজিত কাজীদেরও দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট