চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে বসতঘর পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত ৩ টায় উপজেলার করেরহাট ও সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দুর্গাপুর ইউনিয়নে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেছেন এ ঘটনায় তাদের ২২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা হল- করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের আবুল কাশেমের বসতঘর। আগুনে তার বসতঘর, আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের শেখ আহম্মদ মৌলভী বাড়ির মৃত কবির আহমদের ছেলে নুর মোহাম্মদ রাজন এবং মো. আবদুল মান্নানের টিনসেট বসতঘর রান্নাঘরসহ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
করেরহাট ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত আবুল কাশেম বলেন, রবিবার রাতের খাবার খেয়ে আমি শুয়ে পড়ি। এসময় ঘরের বাহিরে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, যাতে আমি আগুনে পুড়ে মারা যায়। আমার ছেলে বাদশার সাথে লেনদেনের বিষয় নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে ঝামেলা চলছিল। গত কিছুদিন আগেও আমাকে হুমকি ধমকি দিয়ে যায় তারা। তখন আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আজ আমার ঘরে তারা আগুন লাগিয়ে তিলে তিলে গড়া সবকিছু নিমিষেই শেষ করে দিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমি থানার বাহিরে আছি। থানায় গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারব।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত মো. আবদুল মান্নান বলেন, সোমবার সকালে আমার বড় ভাই রাজনের ঘরের ভেতর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আমার অসুস্থ ভগ্নিপতিকে দেখার জন্য তারা ঘরে তালা লাগিয়ে রবিবার সেখানে গিয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে আমার ঘরে থাকা আট আনা ওজনের স্বর্ণ, নগদ ২ লাখ টাকা ও আমার ভাইয়ের ৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ১ লাখ টাকা পুড়ে যায়।পরনে থাকা কাপড় ছাড়া ঘরের কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। অগ্নিকাণ্ডে আমাদের দলিল, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বদ্ধ ঘরে আগুন লাগার কথা না। কেউ শত্রুতাবশত আগুন লাগিয়েছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা দরকার।
বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনের সিনিয়র কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন তিতাশ বলেন, রবিবার রাতে করেরহাটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মোটরের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।
তিনি আরও বলেন, আবুল কাশেম মাটির নিচে একটি মোটর বসিয়েছেন। মোটরটি চালিয়ে তিনি ঘুমিয়ে গেছেন। মোটর বন্ধ না করার কারণে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত অফিসার আহমদ হোসেন বলেন, দুর্গাপুর ইউনিয়নে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে দুই ভাইয়ের বসতঘর ও রান্নাঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে বোঝা যাবে।
পূর্বকোণ/পারভেজ