চট্টগ্রামবাসীর বহুল প্রত্যাশিত ১৫০ শয্যার বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পাশে গোঁয়াছি বাগান এলাকায় নির্মিতব্য এই বিশেষায়িত ইউনিটের কাজ এখন পুরোদমে চলছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৭ থেকে ৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চমেকের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন গোঁয়াছি বাগান এলাকার পাহাড়ের ঢালু অংশে মাটি কেটে সমান করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি ঢাল কেটে সেখানে চীনা প্রযুক্তি ‘সয়েল নেইলিং’ পদ্ধতিতে কলাম বসানোর প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি যেন সহজে নিষ্কাশন হয়, সেজন্য উন্নত ঘাস লাগানোরও প্রস্তুতিও চলছে। এছাড়া, বেইসমেন্টের কাজও শুরু করে দিয়েছেন চীনা প্রকৌশলীরা।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, বার্ন ইউনিটের কাজ এখন ৭-৮ শতাংশ অগ্রগতি পেয়েছে। প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতি সন্তোষজনক। কাজ পুরোদমে চলছে, বেইসমেন্ট ঢালাইসহ অন্যান্য সবকিছু চলমান রয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই আরও অগ্রগতি দেখতে পাবো।
২০২৩ সালের ১৩ মার্চ দুই দেশের সরকারের মধ্যে এ নিয়ে চুক্তি হয়। এরপর জায়গা দখল, অবৈধ বসতি উচ্ছেদ ও নানা প্রশাসনিক জটিলতায় প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হয়। প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ ছাড়ের জটিলতায় কাজ শুরু হতে সময় লেগে যায়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১০ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি বছরের শুরু থেকে কাজ শুরুর পর ধীরে ধীরে গতি পেয়েছে প্রকল্পটি। এ প্রকল্পের আওতায় ছয়তলা ভবনের এই ইউনিটে ১৫০ শয্যা ছাড়াও ১০ শয্যার আইসিইউ, ২৫ শয্যার এইচডিইউ, তিনটি আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ থাকবে। ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই প্রকল্পের মধ্যে ১৭৯ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। বাকি ১০৫ কোটি টাকা ব্যয় করবে বাংলাদেশ সরকার।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই ইউনিট চালু হলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগুনে পোড়া রোগীদের জন্য আর ঢাকামুখী হতে হবে না। এখানেই মিলবে আন্তর্জাতিক মানের সেবা। চট্টগ্রামের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের আগুনে পোড়া রোগীদের জন্য এ ইউনিটটি হবে বিশেষায়িত সেবাকেন্দ্র।
পূর্বকোণ/ইবনুর