কক্সবাজার সদর উপজেলায় বাকখালী নদী অবৈধভাবে ভরাট করে জায়গা দখল এবং বালু ও পাথর বিক্রির অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিচালিত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী।
অভিযানে আরও অংশ নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানা, পরিবেশ অধিদপ্তরের কেমিস্ট আবদুস সালাম এবং আনসার বাহিনীর একটি দল।
অভিযানকালে খুরুশকুল মনুপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে জিয়া এন্টারপ্রাইজকে ১৮ হাজার টাকা এবং টেকপাড়া মাঝির ঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর অংশ ভরাট করে ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে তাসমিয়া এন্টারপ্রাইজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে মনুপাড়া ও মাঝিরঘাট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। তাসমিয়া এন্টারপ্রাইজ শুধু অবৈধভাবে বালু উত্তোলনই নয়, পাথর বিক্রি এবং বাঁকখালী নদীর প্রায় ২ একর এলাকা জিও ব্যাগ ও মাটি ফেলে ভরাট করে বাঁধ তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল। প্রতিষ্ঠানটি কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এজন্য তাদের কয়েকদিনের সময় দেওয়া হয়েছে এবং সঠিক কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে টেকপাড়া মাঝির ঘাট এলাকায় তাসমিয়া এন্টারপ্রাইজ গত কয়েক মাস ধরে রাতের আঁধারে বালু ও মাটি ফেলে বাঁকখালী নদীর প্রায় ৩ একর জায়গা ভরাট করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল। সিন্ডিকেটটি সমুদ্রের পাড়ে জিও ব্যাগ দিয়ে বিশাল বাঁধ তৈরি করে প্যারাবন কেটে নদীর প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত ভরাট করে ফেলেছে এবং সেখানে পাথরের ব্যবসাও পরিচালনা করছিল। এমন খবর পেয়েই প্রশাসন দ্রুত সেখানে অভিযান চালায়।
এই ঘটনায় স্থানীয় পরিবেশবাদীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, নদী ভরাট এবং প্যারাবন ধ্বংসের ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসনের এই অভিযানকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্বকোণ/এরফান/জেইউ/পারভেজ