চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

সর্বশেষ:

সাতকানিয়ায় বাবার ধর্ষণে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা! স্বামীকে পুলিশে দিলেন স্ত্রী
গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী

সাতকানিয়ায় বাবার ধর্ষণে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা! স্বামীকে পুলিশে দিলেন স্ত্রী

সাতকানিয়া সংবাদদাতা

২৪ এপ্রিল, ২০২৫ | ৩:১১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা মোহাম্মদ আলীকে (৪০) আটক করে পুলিশের কাছে দিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা ও আত্মীয়-স্বজনরা।

 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কেরানিহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অভিযুক্ত বাবাকে আটকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।।

 

গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনোহর চৌধুরী পাড়ার মৃত এমদাদ আলীর ছেলে।

 

এ ঘটনায় অভিযুক্তের স্ত্রী নাহিদা আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন।

 

জানা গেছে, গত ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেট ব্যথাসহ বমি হচ্ছিল। এ কারণে গত ২২ এপ্রিল তাকে অভিযুক্ত বাবা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে উপজেলার কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠান নাহিদা আক্তার। ওই সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নাহিদাকে ফোন দিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলেন। নাহিদা  তাৎক্ষণিক হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তার মেয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। তিনি চিকিৎসকের কাছে কি হয়েছে জানতে চাইলে চিকিৎসক জানান, তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে তার পেট ব্যথাসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরে অভিযুক্ত বাবা মোহাম্মদ আলীর অনুরোধে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েটির গর্ভপাত করান।

 

এরপর নাহিদা তার মেয়েকে এ ঘটনাকে কে ঘটিয়েছে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টার দিকে ও ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১ টার দিকে দু’দফায় তার শয়ন কক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন তারই বাবা মোহাম্মদ আলী। এ ঘটনা কাউকে প্রকাশ করলে হত্যার হুমকিও দেন  অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী। পরে নাহিদা তার ভাই মো. নাজিম উদ্দিনকে ফোন দিয়ে হাসপাতালে ডেকে আনেন। এ সময় তারা ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে মোহাম্মদ আলীকে আটক করে সাতকানিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

 

মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে বাদী নাহিদা আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুটি ছেলে ও দুটি মেয়ে রয়েছে। ধর্ষণের শিকার বড় মেয়ের বয়স এখন ১২ বছর। সে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের কেফায়েত উল্লাহ কবির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। গত ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পেট ব্যথাসহ বমি শুরু হলে মা নাহিদা আক্তার মেয়েকে এর ব্যথার কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, ভয়ে সে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রেখেছিল। 

 

ধর্ষণের শিকার মেয়েটির মা নাহিদা আক্তার বলেন, মেয়েকে গর্ভপাত করানোর পরে জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে জানায় তার বাবা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ধর্ষণের বিষয়ে আমার স্বামী মোহাম্মদ আলীর কাছ থেকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে এ বিষয়ে কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে আমি মুঠোফোনে কল দিয়ে আমার ভাই মো. নাজিম উদ্দিনকে হাসপাতালে ডেকে আনি। এরপর তার সহায়তায় আমার স্বামীকে থানায় এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। যে মানুষ নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করতে পারে সে কখনোই আমার স্বামী হতে পারে না। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় তার মা ও আত্মীয়-স্বজনরা অভিযুক্ত বাবাকে থানায় এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট