চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

হাটহাজারীতে মিটার না দেখেই পল্লী বিদ্যুতের ‘মনগড়া’ বিল

খোরশেদ আলম শিমুল, হাটহাজারী

২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২:১৫ অপরাহ্ণ

বাজার মূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, আরেকদিকে হাটহাজারীতে পল্লী বিদ্যুতের মিটার না দেখে অস্বাভাবিক বিলের খড়গ। এই অস্বাভাবিক বিলে বেড়েছে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের মাত্রা। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছে রিডিং অনুযায়ী বিল করা হচ্ছে। এদিকে বিলের কাগজে রয়ে গেছে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ লেখা স্লোগানটি।

 

সূত্রে জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন বেশির ভাগ এলাকায় প্রতি মাসে মিটার না দেখে অস্বাভাবিক বিলের খড়ক নেমেছে। কয়েকদিন আগে গ্রাহকরা জানতে পারেন, গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বিল এসেছে অস্বাভাবিক পর্যায়ে। এমন অভিযোগে বেশ কিছু গ্রাহকের বিলের কপি এসেছে এ প্রতিবেদকের হাতে।

 

এতে দেখা যায়, উপজেলার ধলই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের এনায়েতপুর গ্রামের মো. আবদুল রাজ্জাকের (হিসাব নং -১০৬৮০৩০৫৫৪৭০০) অক্টোবর মাসের বিল এসেছে ৪২,৪১০ টাকা, গড়দুয়ারা ২নং ওয়ার্ডের নাম প্রকাশ না করে এক গ্রাহকের (হিসাব নং-১২৭৮/০৮০৮) আগস্ট-২৪ বিল এসেছে ১৬৫৭ টাকা, একই মিটারে সেপ্টম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ১৬৫৭ টাকা, এছাড়া হিসাব নং-১৬০০/০৯২৫ এর অক্টোবর ২৪ ইং ৫০৭ টাকা, একই মিটারে নভেম্বর মাসে ৫০৭ টাকা, গড়দুয়ারা ১নং ওয়ার্ডে (হিসাব নং-১৭০০/০৮১০) জুন ২০২৪ইং ২৫১২ টাকা, জুলাই মাসে ২৭৬৫ টাকা, আগস্ট মাসে ২৮৯১ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ২৫৫৪ টাকা, অক্টোবর মাসে ২৪৭০ টাকা, নভেম্বর মাসে ২৮৪৯ টাকা।

 

বিলের এই অসামঞ্জস্যতার সত্যতা অনেক গ্রাহকের বিলের কপি থেকে পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ মিটার না দেখে এর আগের মাসের বিলের উপর আন্তাজ করে বিল করা হয়।

 

অভিযোগের সমাধান পেতে প্রতিদিনই ভুক্তভুগী গ্রাহকরা ভিড় জমাচ্ছেন হাটহাজারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে। সেখানে অস্বাভাবিক বিলের অভিযোগ নিয়ে গেলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মকর্তারা বলছেন মিটারের রিডিং অনুযায়ী বিল করা হয়েছে। অথবা মিটারে সমস্যা। তবে গ্রাহকরা বলছেন মিটার না দেখেই বিল দিচ্ছে।

 

উপজেলার ধলই ইউনিয়নের এনায়েতপুর এলাকার আব্দুল রাজ্জাক নামে এক গ্রাহক জানান, নতুন ঘরে নতুন মিটার লাগানো হয়। আমরা নতুন ঘরে উঠলাম মাত্র ২৫দিন। এরমধ্যে এক মাসে বিল দেওয়া হয় ৪২ হাজার ৪ শত ১০ টাকা।

 

আব্দুল রাজ্জাক প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি আমার জীবনে যা শুনিনি তা আমার ক্ষেত্রে দেখেছি, আমার বৈদ্যুতিক বিল সর্বোচ্চ দুই হতে তিন হাজার টাকা হতে পারে কিন্তু এখানে ৪২ হাজার টাকা করা হয়েছে। আমি কি এখানে কোন কলকারখানা পরিচালনা করছি যে আমাকে এত টাকা বিল দিয়েছে’। এ ব্যাপারে গত ২৯ অক্টোবর হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

 

গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বখতিয়ার উদ্দিন জানান, গত চার মাসে আমার বাড়িতে মিটার দেখতে পল্লী বিদ্যুতের কেউ আসেনি। প্রতি মাসে আমাকে তাদের মন গড়া বিল দিয়ে যাচ্ছে। অথচ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস আমাদের কাছ থেকে ডিমান্ড চার্জ ১৬৮ টাকা, মিটার ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা, এতো টাকা নেওয়ার পরও তারা মিটার দেখতে বাড়িতে আসে না। এভাবে অস্বাভাবিক বিলের খড়গ গুণতে হচ্ছে আমাদের সাধারণ গ্রাহককে।

 

অভিযোগের বিষয়ে হাটহাজারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি ম্যানেজার (ডিজিএম) মাহবুবুর রহমান বলেন, রিডিং অনুযায়ী বিল করা হয়েছে। অস্বাভাবিক বিল এসে থাকলে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট