কোর্স শেষ করে দেশে ফেরার আগে এক টিচারের সঙ্গে দেখা করলাম। উনি আমার অনলাইন ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন। ইন্টারভিউ শেষ করার আগে উনার একটি প্রশ্ন ছিল– আপনাকে যদি আমরা কোর্সে সুযোগ দেয়, কোর্স শেষ করে পরবর্তীতে আপনি দেশে ফিরে যাবেন তো?
প্রথমে প্রশ্নটি আমি বুঝতে পারিনি। আসলে এমন একটা প্রশ্নের জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। বিনয় ও সম্মানের সঙ্গে উনি আমাকে আবারও প্রশ্নটি করলেন। যথাযথ জবাবও দিলাম। আসলে দোষটা তো আর উনার নয়।
ফেরার আগে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বার্তা। প্রসঙ্গক্রমে জানতে চাইলাম, আমেরিকান পার্টিসিপেন্টকেও একই প্রশ্ন করা হয় কিনা! ……………..।
উনার ভাষ্যমতে, উন্নত জীবনযাপনের আশায় অনেকেই থেকে যান। প্রসঙ্গক্রমে বললাম, এই দোষটা তো আর আমার বাংলাদেশের না। বাংলাদেশের মানুষেরও নয়। আমি যদি কোন অন্যায় করে থাকি, সেই দোষটা শুধু আমারই।
প্রায় দুই মাস ইউরোপে কাটালাম। হাঙ্গেরি, ইতালি, স্পেন ও সুইজারল্যান্ড – চারটি দেশে ভ্রমণ করেছি। আমার একটি বারের জন্যও মনে হয়নি আমি আর বাংলাদেশে না ফিরে যাই!
দেশে ফেরার পর বার বার মনে হচ্ছে, আসলে উন্নত জীবন বলতে কী বোঝায়?
আমার কাছে সেটাই উন্নত জীবন, যেভাবে আমি ভালো ও আনন্দে আছি। সেটা বাংলাদেশ বা পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন, ভালো থাকা বলে কথা। ইউরোপ সফরে আমার এই উপলব্ধিটা আরও পোক্ত হয়েছে। এই যে আমি টং দোকানে বসে বাংলা সিনেমা আর চায়ের সঙ্গে রাজা উজির মেরে রুমে ফিরলাম। এটাই আমার জন্য আনন্দের।
লেখক: জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবলার ও সাংবাদিক
পূর্বকোণ/জেইউ