চট্টগ্রাম বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

আমদানিকৃত সোলার প্যানেলের শুল্ক ১% বহাল রাখার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ মে, ২০২৪ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের স্বার্থে ও দেশীয় সোলার সেক্টর রক্ষার্থে আগামী বাজেটে আমদানিকৃত সোলার প্যানেলের শুল্ক ১% বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন সোলার মডিউল ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক গোলাম বাকী মাসুদ।

 

তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে সৌর বিদ্যুতের অনেক চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে সোলার প্যানেল প্রস্তুত করা হচ্ছে। সুতরাং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আমদানিকৃত প্যানেলের উপর ন্যূনতম শুল্ক কর থাকা বাঞ্চনীয়। দেশীয় শিল্প বিকাশে সরকারের কার্যকরী ভূমিকা না থাকলে সোলার খাতে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না। তাই আমদানিকৃত সোলার প্যানেলের শুল্ক ১% বহাল রাখার জোর আবেদন জানাই।

 

আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ প্রসঙ্গে পূর্বকোণ প্রতিনিধির সঙ্গে ‘বাজেট ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় গোলাম বাকী মাসুদ এসব কথা বলেন।

 

তিনি আরো বলেন, সরকার বরাবরই আমদানি বিকল্প পণ্য তথা আমদানি হ্রাস ও দেশীয় শিল্পের সর্বোচ্চ ব্যবহারের উপর জোর দিয়ে আসছে। সুতরাং আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং দেশীয় উৎপাদনে অগ্রাধিকারের জন্য আমদানিকৃত ফিনিশড সোলার প্যানেলের উপর কমপক্ষে ১% শুল্ক থাকা উচিত। দেশীয় শিল্পের বিকাশ যত বেশি হবে তত বেশি কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে।

 

কর অব্যহতির সুবিধা প্রসঙ্গে গোলাম বাকী মাসুদ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২১ থেকে ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা হালকা প্রকৌশল শিল্পের জন্য ১০ বছর মেয়াদি কর অব্যহতির সুবিধা প্রদান করেছে। তবে সেটি শুধুমাত্র শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের জন্য বলবৎ রাখা হয়েছে। এই বিধানের সংশোধন প্রয়োজন। কারণ ওই বিধানে ২০২১ সালের পূর্বের বিনিয়োগকারীদের উপেক্ষা করা হয়েছে। যা একটি দেশের চলমান ধারাবাহিক উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য কাম্য নয়।

 

 

অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের অধিকাংশই পুরাতন বিনিয়োগকারীদের দখলে, যা দীর্ঘ সময়ের আস্থা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। তাই পুরাতন বিনিয়োগকারীদের উপেক্ষা করা হলে এই সম্ভাবনাময় বাজার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সকল বিনিয়োগকারীকে সমানভাবে বিবেচনা করে বাণিজ্যিক উৎপাদন কোন সালের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সোলার প্যানেলের সকল বাণিজ্যিক উৎপাদনকারীদের কর অব্যহতির সুবিধায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানাই। পাশাপাশি, শিল্প-কারখানার পাশপাশি অফিস, বাসা-বাড়ি, যানবাহনসহ সকল ক্ষেত্রে এই বিধান জারির দাবি রাখি। এছড়া পূর্ণাঙ্গ যন্ত্র ও খুচরা যন্ত্রাংশ উভয়ের জন্য এই সুবিধা বলবৎ রাখার দাবি রাখি।

 

মূসক কর্তনের হার কমানোর দাবি জানিয়ে গোলাম বাকী মাসুদ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসআরও অনুযায়ী দেশীয় সোলার প্যানেল উৎপাদনকারীদের ক্ষেত্রে যোগানদার হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ সেবা সরবরাহকালে উৎসে মূসক কর্তনের হার বর্তমানে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বলবৎ রয়েছে। এটি পরিবর্তন করে ২% নির্ধারণের দাবি জানাই।

 

তিনি বলেন, প্রচলিত বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে সরকার সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে আগ্রহী। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্ম-পরিকল্পনা ও প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্প ও কর্মপরিকল্পনা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সোলার খাতে সরকারি পর্যাপ্ত সহায়তা দরকার। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার যত বাড়বে, প্রচলিত বিদ্যুতের ব্যবহার তত কমবে। ফলে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় কমবে। কিন্তু যোগানদার হিসেবে উৎসে মূসক কর্তনের হার বেশি হওয়ায় সোলার প্যানেল খাতের পণ্য বা সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা প্রকল্প বাস্তবায়ন খরচকে প্রভাবিত করে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প তথা চাহিদার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই যোগানদার হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ সেবা সরবরাহকালে উৎসে মূসক কর্তনের হার কমানোর বিকল্প নেই।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট