চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডা. শাহ আলম খুন রহস্যে ঘেরা !

ষ দু’দিনেও গ্রেপ্তার নেই কোন খুনি ষ হাতে থাকা ঘড়ি ও আঘাতের স্থানে বেঁধে রাখা কাপড় অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে

সৌমিত্র চক্রবর্তী হ সীতাকু-

২১ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ আলম খুনের ঘটনা নিয়ে এলাকায় নানান প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। যদি অর্থ সম্পদ ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে এই খুন হয় তবে তার হাতে থাকা দামী ঘড়ি কেন লুট হয়নি কিংবা তার এক হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপের স্থানে অন্য হাতের কাপড় কেটে বেঁধে দিয়েছিলো কারা এবং কেন ? এসব প্রশ্নই এখন ঘুরছে এলাকাবাসীর মুখে মুখে। ফলে খুনটি রহস্যে ঘেরা বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে এ হত্যার পর দুই দিন অতিক্রান্ত হলেও এখনো কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। তবে আসামি গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকু-ের কুমিরা ইউনিয়নের ছোটকুমিরা গ্রামের মরহুম মাষ্টার আজিজুল হকের ছেলে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহআলম গত বৃহস্পতিবার রাতে ছোটকুমিরায় অবস্থিত নিজের ক্লিনিক বেবি কেয়ার ডায়াগনস্টিকে চিকিৎসা সেবা শেষে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে একটি লেগুনাতে উঠে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে ছোটকুমিরা বাইপাস সড়কের পাশে তার লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। এদিকে লাশটির মুখমন্ডল ছিলো এসিডে পোড়া ফলে তাকে প্রথম দেখাতে চিনতে পারেননি কেউই। অন্যদিকে তার একটি হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ থাকলেও সেই রক্তাক্ত আঘাতের স্থানে রক্ত বন্ধের উদ্দেশ্যে কেউ অন্য হাতের কাপড় কেটে বেঁধে দেয়। পুলিশ ও

সিআইডি এসব খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে খুনিরা কেন তার চেহারা বিকৃত করতে চেয়েছে এবং তার মূল্যবান ঘড়ি কেড়ে না নেওয়া, ক্ষতস্থানে কাপড় বেঁধে দেওয়া নানান প্রশ্নের সৃষ্টি করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই মো. সাইদুল ইসলামও এসব দৃশ্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন। গতকাল রবিবার এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন যদি রোড ডাকাতরা টাকা-সম্পদ কেড়ে নিতে চাইত তাহলে খুনের পরও তার হাতে দামী এই ঘড়ি থাকত না। আবার দেখুন তার এক হাতের কোপ দিয়ে সেই আততায়ীরাই আবার অন্য হাতের কাপড় কেটে ক্ষতস্থানে বেঁধে রক্ত বন্ধ করবেন-এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য ? তাহলে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে? তা সত্যিই রহস্যজনক। এই রহস্যের কথা বলেন কুমিরার ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরীও। তিনি বলেন, এমন একজন নিঃস্বার্থ পরোপকারী ডাক্তার যিনি কিনা সৌদি আরবে ৩০ বছর সুনামের সাথে ডাক্তারি করে আরো থাকার সুযোগ থাকার পরও এলাকার মানুষের সেবার জন্য চলে আসেন তাকে কে হত্যা করতে পারে আমার বোধগম্য নয়। এই হত্যা আমরা কিছুতেই মানতে পারছি না। তিনি বলেন এই হত্যার পেছনে নানান কাহিনী থাকতে পারে। এলাকাবাসী ও তার আত্নীয়রা কেউ কেউ তার ঘনিষ্ট ব্যক্তিদেরও সন্দেহ করছেন বলে শুনছি। এখন প্রকৃত ঘটনা কি তা কেবল পুলিশকেই তদন্ত করে বের করতে হবে। এদিকে চট্টগ্রামের ডাক্তাদের প্রিয় সহকর্মী ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ আলমের এই মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর থেকে এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ছুটে আসছেন তার হাতে গড়ে তোলা বেবি কেয়ার ডায়াগনস্টিক ও তার বাড়ি পরিদর্শনে। সকলেই তার সুচিকিৎসায় উপকৃত হবার কথা বলে আফসোস করছেন এবং তার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- থানার ওসির দায়িত্বে থাকা ওসি (তদন্ত) মো. শামীম শেখ বলেন আসলেই এ হত্যাকান্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। তার স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা তদন্তের মাধ্যমে আসামি গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট