চট্টগ্রাম রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

আবারও দুশ্চিন্তা করোনা সংক্রমণে

ইমাম হোসাইন রাজু

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ

আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি না হলেও আবারও চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণ। ধীরগতিতে হলেও ধারাবাহিকভাবে সারাদেশের মতো সংক্রমিত রোগী পাওয়া যাচ্ছে চট্টগ্রামেও। এছাড়াও দেশে ইতোমধ্যে করোনার নতুন উপধরন শনাক্ত হয়েছে। এমতাবস্থায় ফের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও সংক্রমণ রোধে এরইমধ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরমধ্যে কোভিড মোকাবেলায় করোনার চতুর্থ ডোজ প্রদানের পাশাপাশি মাস্ক পরিধান এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে।

 

খবর নিয়ে জানা গেছে, দেশে করোনার সংক্রমণের হার বহুদিন ধরে এক শতাংশের নিচে ছিল। যদিও গেল জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে এ হার বাড়তে থাকে। যা গেল মাসেও তিন থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত থাকলেও সর্বশেষ গতকাল এ হার আট শতাংশ ছাড়িয়েছে। রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম হলেও পরীক্ষার তুলনায় চট্টগ্রামেও শনাক্তের হার অনেকটাই ঊর্ধ্বমুখী। শুধু তাই নয়, পূর্বের চেয়ে উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এরমধ্যে কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছে, তাদের শারীরিক অবস্থাও অবনতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যাদের আইসিইউতে পর্যন্ত ভর্তি থাকতে হয়েছে। গতকালও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে এক রোগী ভর্তি ছিলেন। এমতাবস্থায় সকলকে সচেতনতার পাশাপাশি সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

 

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সর্বোমট ৯ জন কোভিড আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার অন্তত ১৫ শতাংশের বেশি ছিল।

 

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বহুদিন পর করোনা পজিটিভ একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে শারীরিক জটিলতা থাকার পর ওই রোগীকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু আবারও দু-একজন করে রোগী পাওয়া যাচ্ছে, তাই এখন থেকেই সকলকে সতর্ক থাকাটা জরুরি।’

 

এদিকে, করোনার বিস্তাররোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদারকরণ এবং মাস্ক পরিধানে সর্বসাধারণকে উৎসাহিতকরণে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। একইসঙ্গে চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতেও।

 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইদানিং কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় কোভিডের বিস্তার রোধকল্পে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করণ ও মাস্ক পরিধানে সর্বসাধারণকে উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।

 

চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা :
নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত ও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় টিকাদান কর্মসূচি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আতঙ্কের মতো কিছু না হলেও কিছু কিছু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ইতোমধ্যে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে, তবে সাধারণ জনগণকে বেশি সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। এছাড়া চতুর্থ ডোজের টিকা প্রদানের জন্যও চিন্তা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। হয়তো কিছুদিন পর এ নিয়ে কাজ শুরু হতে পারে।’

 

এদিকে, চট্টগ্রামেও করোনার টিকাদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই লাখ ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়া। তিনি বলেন, দুই লাখ ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। ভ্যাকসিন পাওয়া সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট