হালদা পাড়ে রাউজান ও হাটহাজারী এলাকার পুরাতন ছয় হ্যাচারিকে সংস্কার করে সুযোগ-সুবিধা দ্বিগুণ বৃদ্ধি, নতুন করে আরো ছয়টি হ্যাচারি কমপ্লেক্স নির্মাণ, চারটি সার্ভেল্যান্স চেকপোস্ট কাম ওয়াচ টাওয়ার ও ঘাট নির্মাণসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি প্রকল্প তৈরি করে মৎস্য অধিদপ্তর। তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৯ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেলেও কার্যত গত দুই বছরে প্রকল্পের কোন অগ্রগতি নেই। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের ধীরগতি ও সময়ক্ষেপণের কারণে প্রকল্পটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়ে হয়েছে নানা সংশয়। তাতে হতাশ ডিম সংগ্রহকারীরা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হালদার ডিম সংগ্রহকারীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ রুই জাতীয় মাছের প্রজনন ও রেণু উৎপাদন বৃদ্ধি পেত। বাড়তো ডিম সংগ্রহকারীদের সুযোগ-সুবিধাও। এছাড়াও দরিদ্র জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান, স্টাডি ও গবেষণা, হালদা নদীতে অবৈধ মৎস্য শিকার, দূষণ সৃষ্টি প্রতিরোধ এবং মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন, স্টেকহোল্ডার উদ্বুদ্ধকরণ সভাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের কথাও উল্লেখ রয়েছে প্রণীত প্রকল্পে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে হালদার ডিম সংগ্রহকারীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ রুই জাতীয় মাছের প্রজনন ও রেণু উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ প্রকল্পে হালদা পাড়ে নতুন করে আরো ছয়টি আধুনিক মানের হ্যাচারি নির্মাণ এবং পুরাতন ছয় হ্যাচারিকে সংস্কারের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। প্রকল্পের অধীনে মদুনাঘাট এলাকায় নির্মাণ করা হবে একটি চেকপোস্ট। প্রকল্পটি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে মন্ত্রণালয়। তবে এখন হালদা প্রকল্পটি কোন অবস্থায় রয়েছে তা আমি জানি না।’
হালদা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় এক যুগ আগে নদীর পাড়ে ছয়টি হ্যাচারি নির্মাণ করে মৎস্য অধিদপ্তর। রাউজানের কাগতিয়া, গহিরার মোবারকখীল ও পশ্চিম গহিরা এবং হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শার মাছুয়াঘোনা, শাহ মাদারি ও মদুনাঘাট বড়ুয়াপাড়ায় এসব হ্যাচারির অবস্থান। কিন্তু নির্মাণগত ত্রুটি, সময়মতো সংস্কার, তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হ্যাচারিগুলো থেকে প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না ডিম সংগ্রহকারীরা। এরমধ্যে সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাগতিয়া হ্যাচারি। অনেকটা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পশ্চিম গহিরা হ্যাচারিও। এ নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে ডিম সংগ্রহকারীদের।
বর্তমানে রাউজানের গহিরার মোবারকখীল, হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শার মাছুয়াঘোনা, শাহ মাদারি ও মদুনাঘাট বড়ুয়াপাড়ার হ্যাচারি চালু থাকলেও নিয়মিত সংস্কারের অভাব এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা না থাকায় সবগুলো হ্যাচারি থেকে প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না ডিম আহরণকারীরা। বিভিন্ন সময়ে মারা যাচ্ছে রেণু। তাই প্রণীত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উপকৃত হতো ডিম সংগ্রহকারীরা।
পূর্বকোণ/মাহমুদ