চট্টগ্রাম রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন জাগবে কবে ?
এস এম শহীদুল ইসলাম ও আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল

চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন জাগবে কবে ?

হুমায়ুন কবির কিরণ

১৯ জুন, ২০২৫ | ১:১২ অপরাহ্ণ

হামজা চৌধুরী, সামিত সোম, ফাহমিদুল ইসলাম’রা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেন, কার্যত পুরো দেশের ফুটবল জেগে উঠেছিল। প্রত্যাশা ছিল, জাতীয় ফুটবল দলের এমন রঙিন দৃশ্য দেশের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়বে। প্রকৃত অর্থে তার কোনো লক্ষণই নেই। বিচ্ছিন্ন কিছু আয়োজন ছাড়া বলতে গেলে থমকেই আছে জেলা ক্রীড়াঙ্গন। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)’র মূল ইভেন্ট প্রিমিয়ার, প্রথম বিভাগসহ ফুটবল ও ক্রিকেটের বিভিন্ন লিগ মাঠে নেই গত প্রায় এক বছর। কবে শুরু হবে, তার সঠিক তথ্য খোদ আয়োজকদের কাছেই নেই।

 

চট্টগ্রামে খেলাধুলার প্রাণ সংগঠন সিজেকেএস। ফুটবল ও ক্রিকেটসহ সংস্থাটি প্রতি মৌসুমে ৩৬ বা তারও বেশি ইভেন্ট মাঠে নামালেও ফুটবলের ভরা মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে মধ্যরাতের নীরবতা! চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন (সিডিএফএ) এই সময়ে লিগ আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও মাঠের বাইরের বিভিন্ন কারণে চলতি মৌসুমে লিগ শুরুর প্রাথমিক পর্যায়েও নেই তারা। যদিও সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম জানালেন, ক্লাবগুলো সম্মত থাকলে তারা যে কোনো সময় ফুটবল মৌসুম শুরু করতে প্রস্তুত। তিনি চাইছেন জুলাই’র শেষে কিংবা আগস্টের প্রথম দিকেই চট্টগ্রামের ঘরোয়া ফুটবল মাঠে নামাতে। তবে বাস্তবতা কিন্তু এর বিপরীত। দীর্ঘ বিরতি এবং স্পন্সর সংকট থেকে শুরু করে নানা কারণে ক্লাবগুলো প্রস্তুত নয় বলেই কয়েকটি ক্লাবের কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে ফুটবল মৌসুম সফল সমাপ্তির পর গেলো বছর দলবদল সম্পন্ন করে আগস্টে শুরুর কথা থাকলেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে সেই লিগ আর মাঠে গড়ায়নি। এই সময়ে বয়সভিত্তিক ফুটবল

 

টুর্নামেন্টসহ চলমান মেয়র কাপ ক্রিকেটের কিছু আয়োজন মাঠে থাকলেও ঘরোয়া মূল লিগসহ সিজেকেএস বা সিডিএফএ’র ক্যালেন্ডার ইভেন্টগুলো নেই। খেলাধুলা ও খেলোয়াড়দের স্বার্থে যা জরুরি বলেই মানছেন ক্রীড়ামহল। ফুটবলকে মাঠে নামাতে সিডিএফএ বেশ ক’বার উদ্যোগ নিয়েছিল। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সঙ্গে সিডিএফএ নেতৃবৃন্দ, খেলোয়াড় সমিতি ও সংগঠকদের বৈঠকের পরও সমাধান আসেনি। বেশ ক’বারই খেলা শুরুর সম্ভাব্য সময়ও জানানো হয়েছিল। সর্বশেষ এই সময়টি ছিল চলতি বছরের মে’তে। কিন্তু ফুটবল মৌসুম এখনও দেখেনি আলোর মুখ। অনেকেই বলছেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম বাফুফেকে বরাদ্দ দেয়ার কারণেই থমকে পড়েছে ঘরোয়া খেলাধুলা।

 

সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা জেনেছি বাফুফে এখানে তাদের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে আগ্রহী নয়, যা তারা অফিসিয়ালি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই জানিয়ে দিতে পারে। বাফুফে শুধু আন্তর্জাতিক ফুটবল আয়োজনে সহযোগিতা চাইছে। যা অতীতের মতোই অব্যাহত থাকবে বলে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকগণ বারবারই বলে আসছেন। তবে নিরবচ্ছিন্ন ক্রীড়া আয়োজনের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে আমি বিনীত অনুরোধ করবো জেলা ক্রীড়া সংস্থায় দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার। চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সকলের চাওয়া একই। তাদের বক্তব্য এমন, স্টেডিয়ামতো খেলাধুলার জায়গা। সমস্যার জায়গায় আলোচনার মাধ্যমে অবশ্যই সমাধান সম্ভব। কিন্তু মাঠে খেলাধুলা বন্ধ রেখে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতি অসম্ভব।

 

সিডিএফএ’র সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল বলেন, ক্লাবগুলো আমাদের বরাবরই সহযোগিতা করছে। কিন্তু প্রিমিয়ার বা প্রথম বিভাগ ফুটবল ও ক্রিকেটের যে বাজেট বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা অনেক ক্লাবের জন্যই কষ্টসাধ্য। স্পন্সর সংকট বড় ইস্যু বটেই তার ওপর সিজেকেএস’র বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণে কাউন্সিলরশিপ নিয়েও কিছু ক্লাব অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

 

অনেকেই আবার বলছেন, সিডিএফএ তৃতীয় বিভাগসহ বেশ কিছু আয়োজনে জেলা স্টেডিয়াম ব্যবহার করে না। ফুটবলকে মাঠে নামাতে আন্তরিক হলে, এসোসিয়েশনটি চাইলে তৃতীয় বিভাগ দিয়ে মৌসুম শুরু করতে পারতো। কিন্তু এখানেও সংকট। কারণ, লিগ শুরু হয় ওপর থেকে, প্রিমিয়ার দিয়ে। প্রতিটি লিগের অবনমিত দল পরের ধাপে খেলার জন্যই এ ব্যবস্থা। যার কারণে শেষ থেকেও (তৃতীয় বিভাগ) লিগ শুরু করতে পারছে না সিডিএফএ।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট