চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

ভবনের মূল নকশার অনুমোদন, নভেম্বরে টেন্ডার

আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পাচ্ছে কর্ণফুলী

মোর্শেদ নয়ন, কর্ণফুলী

২১ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী উপজেলায় স্থাপিত হতে যাচ্ছে দেশের আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে স্থাপত্য অধিদপ্তর প্রণীত ভবনের মূল নকশা। আগামী নভেম্বরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের নিমিত্তে টেন্ডার আহ্বান করা হবে।

উপজেলার পিএবি সড়কের শিকলবাহা ওয়াই জংশন এলাকায় এসআর স্কয়ারের পাশে নির্ধারিত ১.১৯ একর ভূমিতে ওই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘১১টি মডার্ন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ওই আধুনিক ফায়ার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপিত হতে যাচ্ছে। ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এ স্টেশন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘১১টি মডার্ন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এসব স্টেশন স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা, শিকলবাহা, জুলধা, চরলক্ষ্যা ও বড়উঠান ইউনিয়নে গত কয়েক দশকে গড়ে উঠেছে ছোটবড় শতাধিক শিল্পকারখানা। এক সময়ের নীরব এই জনপদ হয়ে উঠেছে শিল্পনগর। কর্ণফুলী নদীর অবকাঠামোগত আর শাহ আমানত সেতুর সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে সহজ যোগাযোগ, কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া, কারখানার জন্য কম দামে পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া ইত্যাদি কারণে কর্ণফুলী উপজেলায় শিল্পায়নের প্রসার ঘটছে। এসব শিল্পকারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্য যাচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এছাড়াও দেশের বাইরেও এখানকার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। প্রতিবছর কর্ণফুলী উপজেলার শিল্পকারখানা থেকে কোটি টাকার রাজস্ব জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হয়। কিন্তু এসব কারখানার অগ্নি নিরাপত্তার জন্য উপজেলায় নেই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ কারণে অগ্নিঝুঁকি নিয়েই চলছে কর্ণফুলী উপজেলায় স্থাপিত শিল্প কারখানার কর্মযজ্ঞ। এসব শিল্পকারখানার নিরাপত্তার ও অগ্নিকা-ে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনে উদ্যোগ নেন।

এ ব্যাপারে ওই এলাকার প্রথম বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তা ও ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেড পরিচালক লায়ন হাকিম আলী বলেন, কর্ণফুলী উপজেলা শিল্পাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। আগের মতো এখন পুকুর-জলাশয়ও নেই। তাই কোন কারখানায় অগ্নিকা- ঘটলে নগরীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে অগ্নি নির্বাপণের জন্য গাড়ি যানজট পেরিয়ে আসতে আসতে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। কর্ণফুলী উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপিত হলে এসব কারখানার অগ্নিকা- ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে।

কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ’কর্ণফুলী উপজেলায় ব্যাপক শিল্পায়ন হওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে অগ্নিঝুঁকি। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে ভবনের মূল নকশা চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে। নভেম্বরে টেন্ডার হবে। এটি সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে স্টেশন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট