চট্টগ্রাম সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নিয়ে সুখবর মার্চে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১২:২৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্প নিয়ে আগামী মাসে (মার্চে) সুখবর আসতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, বে-টার্মিনাল বাংলাদেশের গেম চেঞ্জার প্রকল্প। এটি নিয়ে আমাদের কাজ চলমান আছে। আশা করছি, আগামী মাসের মাঝামাঝি এ প্রকল্প নিয়ে সুখবর আছে।

 

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘বন্দরের নিরাপত্তা ও অপারেশনের বিষয়ে খুবই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বন্দরে চুরি করা এতো সহজ কোনো বিষয় না। তবুও আমরা আইএসপিএসের কমপ্লাইন্স আরও স্ট্রং (জোরদার) করেছি।

 

অপারেশনের গতি বাড়ানো প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বন্দরের আউটারে লাইটার জাহাজ অলস বসে থাকার একটা প্রবণতা আছে। তাই পণ্য লোড করার পর লাইটার জাহাজকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পোর্ট লিমিট ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় চট্টগ্রাম বন্দর আইন ও আইএসপিএস কোড অনুযায়ী প্রযোজ্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

রমজানে পণ্য নিয়ে কৃত্রিম সংকট রোধে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা থাকে তা পর্যাপ্ত আমদানির তথ্য আমাদের কাছে আছে। আমরাও শিডিউলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরের পরিবহন আরো গতিশীল করছি। রমজানে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী পণ্যের কৃত্রিম সংকট যেন সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে সবাই নজর রাখবেন। বন্দরের অভ্যন্তরে ও আউটারে কোনো জট যেন না হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

 

রমজান উপলক্ষ্যে দেশে গত দুই মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। এ ছাড়া রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্যও পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

বে টার্মিনাল ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালুর পূর্বে যাতে চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারে সেজন্য বন্দরের আরো অব্যবহৃত জায়গাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান। আরো ওভার ফ্লো ইয়ার্ডের মতো খালি জায়গায় ইয়ার্ড করা হবে। আরো অফডক বাড়ানো যায় কিনা সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

 

এবিআরের প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, অটোমেশনের কাজে এখন কাস্টমসের সাথে আমদানি পণ্যের তথ্য যুক্ত আছে। রপ্তানিও যুক্ত করার কাজ চলছে। এছাড়া এনবিআর নিলাম পণ্য দ্রুত সরাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়োজনে আমরাও লোকবল দিয়ে সহায়তা করবো। সব অকশন পণ্য সরানো গেলে প্রায় ১০ হাজার কনটেইনারের জায়গা খালি হবে বন্দরে।

 

পণ্য সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ করতে ইতিমধ্যে পানগাঁও টার্মিনালের ফিক্সড ভাড়ার সার্কুলার প্রত্যাহার করা হয়েছে। পানগাঁও এখন সুবিধাজনক ও নিরাপদ রুট।

 

বন্দরের আমদানি পণ্য স্ক্যানিং প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআরের কাছে আবেদন করা হয়েছে যেন চট্টগ্রাম বন্দরের সব স্ক্যানারগুলো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে দিয়ে দেওয়া হয়। কারণ বন্দরের অনেক টেকনিক্যাল টিম আছে। সক্ষমতাও আছে। বন্দর স্ক্যানারের দায়িত্ব নিলে বর্তমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান সম্ভব।

 

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দরের বোর্ড সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) হাবিবুর রহমান, (অর্থ) শহীদুল আলম, (প্রকৌশল) কমডোর কাওসার রশিদ ও (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ, সচিব মো. ওমর ফারুক, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম প্রমুখ।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট