শুধু চট্টগ্রাম নয়, দৈনিক পূর্বকোণ সারাদেশের মানুষের মন জয় করেছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার (১০ ফেব্রয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় পূর্বকোণের ৪০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে দৈনিক পূর্বকোণ সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে শ্রদ্ধার সাথে পূর্বকোণ প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ও সাবেক সম্পাদক স্থপতি তসলিমউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে ৪০ বছরে প্রবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় পূর্বকোণ সেন্টারে। ১৯৮৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরীর হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল দৈনিক পূর্বকোণ। যিনি ২০০৭ সালে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। সময়ের আবর্তে পূর্বকোণের হাল ধরেছিলেন তাঁর সন্তান স্থপতি তসলিমউদ্দিন চৌধুরী।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান চট্টগ্রামের রাজনীতিক, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সংস্কৃতিকর্মী, পাঠক-শুভানুধ্যায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিলন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।
শুরুতে দি পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ডা. ম রমিজ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দি পূর্বকোণ লিমিটেডের পরিচালক জাসির চৌধুরী, রাইসিনা চৌধুরী, রাইসিনা চৌধুরী, জোহানা চৌধুরী, রাইনিসা চৌধুরী ও অতিথি ইব্রাহীম রাফাকাত।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ৪০ বছর আগে দৈনিক পূর্বকোণ যখন বের হয় তখন আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তখন বিভিন্ন পত্রিকা আমরা খোঁজছিলাম। হঠাৎ করে একটি পত্রিকা আমাদের সামনে আসলো যেটা সব পত্রিকার থেকে ভিন্ন। যার সবকিছুই ছিল ব্যতিক্রম। লিখনি ও ছাপার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী এই পত্রিকা। তখন থেকে পত্রিকাটি উঠে এসেছে। এর পর এটি আর থামেনি। অনেক পত্রিকার উত্থান-পতন হয়েছে। কিন্তু দৈনিক পূর্বকোণ উঠতেই আছে। আমরা আশা করছি এই পত্রিকাটি উঠতেই থাকবে। এটি যেভাবে চট্টগ্রামবাসীর হৃদয় জয় করেছে তেমনিভাবে সারাদেশের মানুষের মন জয় করবে।
শুভেচ্ছা বক্তেব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, প্রতিদিন অফিসে গিয়ে পূর্বকোণ-আজাদী পত্রিকায় একবার চোখ বুলাই। পূর্বকোণ জনবান্ধব, প্রতিষ্ঠিত, চট্টগ্রামের সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা। আমি এই পত্রিকার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৪০ বছরে পদার্পণ করেছে দৈনিক পূর্বকোণ। আমি মনে করি এটি আমাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের প্রতিকৃত। এই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মরহুম ইউসুফ চৌধুরী রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ দ্বিতীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। এটা পূর্বকোণ পরিবার শুধু নয়, চট্টগ্রামবাসীর জন্য অনন্যপ্রাপ্তি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, পূর্বকোণ চট্টগ্রামবাসীর হৃদয়কে জয় করে রেখেছে। এটি আমারও একটি পছন্দের পত্রিকা। দীর্ঘদিন ধরে পূর্বকোণের আমি নিয়মিত পাঠক। আজকের পত্রিকার ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পূর্বকোণে আরও উন্নতি কামনা করছি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমি যখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তখন থেকে পূর্বকোণের পাঠক। এখনো পূর্বকোণ আগের অবস্থান ধরে রেখেছে। এই পত্রিকা দেশ এবং জাতির কল্যাণে সঠিক সংবাদ পরিবেশন করে এগিয়ে যাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পূর্বকোণ লিমিটেডের পরিচালক জাসির চৌধুরী, পূর্বকোণের সিটি এডিটর বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী খান, চিফ রিপোর্টার ও পূর্বকোণ অনলাইন হেড সাইফুল আলম, সিনিয়র সাব এডিটর হাসনাত মোর্শেদ, ইউনিট প্রধান মিহরাজ উদ্দিন রায়হান, পূর্বকোণ লিমিটেডের জিএম মোজাম্মেল জিলানী, হিসাব বিভাগের প্রধান মো. মারুফ, মানবসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন শীল, সার্কুলেশন ম্যানেজার তাপস কুমার নন্দীসহ সংবাদিক-কর্মকর্তা এবং কর্মচারীগণ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দৈনিক পূর্বকোণের সিনিয়র রিপোর্টার মোহাম্মদ আলী।
এছাড়া চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পূর্বকোণ/জেইউ/এএইচ