চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। দুই অর্থ বছরে হাসপাতালটির জন্য বরাদ্দ আসা অনুদানের সাড়ে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়। ইতোমধ্যে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় হাসপাতালটিতে অনুদান প্রদান স্থগিত করেছে মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে আত্মসাতকৃত অর্থ ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এর আগে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি অনুদানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য-২ অধিশাখার উপসচিব মু. জসীম উদ্দিন তদন্তের জন্য গত ২৯ মে চট্টগ্রামে আসেন। তিনি হাসপাতালটির সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে কথাও বলেন। পাশাপাশি অভিযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে তা যাচাই-বাছাই শেষে গত ১১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ‘২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।’
এদিকে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১) উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি তহবিল তছরুপসহ স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উক্ত হাসপাতালের অনুকূলে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বরাদ্দকৃত ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ রয়েছে মর্মে মতামত প্রদান করা হয়েছে।’
‘এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের অনুকূলে সরকারি অনুদান প্রদান স্থগিত করা হলো। একইসাথে আত্মসাতকৃত ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চালানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা প্রদানপূর্বক চালানের কপি মন্ত্রণালয়ে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। ব্যর্থতায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’ বলেও উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
উল্লেখ্য, ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন একাউন্টের মাধ্যমে হাসপাতালের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারও আগে হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরও তদন্ত করে। তাতেও অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২৫ জানুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. সাব্বির রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে কার্যনির্বাহী পরিষদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। যদিও এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর চৌধুরী আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত সমাজসেবা অধিদপ্তরের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
পূর্বকোণ/এসি