চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ‘পানগাঁও এক্সপ্রেসে’

চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের কাছে ডুবে যাওয়া বন্দরের মালিকানাধীন জাহাজ ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’র ২৩টি কনটেইনার উদ্ধার করা হলেও গত বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উদ্ধারকৃত ১২টি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পথে আবার ডুবে যায় ওই কনটেইনারবাহী একটি বার্জ। এ যেন পানগাঁও এক্সপ্রেসের ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা।

 

গত ৬ জুন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণবাহী কনটেইনার নিয়ে ঢাকার পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালে যাওয়ার পথে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের কাছে ডুবে যায় বন্দরের মালিকানাধীন জাহাজ ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’। বৈরি আবহাওয়ায় ডুবে যাওয়া সেই জাহজটির উদ্ধার কাজ শুরু করতেই সময় লেগে যায় প্রায় তিন মাস। এরই মধ্যে ওই জাহাজে থাকা ৭২ বক্স কনটেইনারের মধ্যে অনেকগুলোই পানিতে ভেসে যায়। আর পানির নিচে ডুবন্ত কনটেইনার উদ্ধার করতে গিয়ে দেখা দেয় আরেক বিড়ম্বনা। পানির নিচ থেকে ওই জাহাজের ২৩টি কনটেইনার উদ্ধার করা হলেও গত বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উদ্ধারকৃত ১২টি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পথে আবার ডুবে যায় ওই কনটেইনারবাহী একটি বার্জ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পানগাঁও এক্সপ্রেস জাহাজের ১২টি ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনার নিয়ে টারমিনেটর নামের ক্রেন-বার্জটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরে ফিরছিল। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে লালদিয়ার চরের কাছাকাছি কর্ণফুলী চ্যানেলের ১৪ নম্বর খালে প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে পাথরের বাঁধের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বার্জটি ডুবে যায়।

 

বার্জের ডুবে যাওয়া অবস্থানকে ‘সারফেস নেভিগেশনের জন্য বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ শুক্রবার সকালে নাবিকদের একটি নোটিশ জারি করে ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকা অতিক্রম করার সময় পাইলটদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের অনুরোধ জানায়। এছাড়া পানগাঁও এক্সপ্রেস অপারেটর সি গ্লোরি শিপিংকে ডুবে যাওয়া কনটেইটারসহ বার্জ উদ্ধার শুরু করার নির্দেশনা দেয়। ১২টির মধ্যে ৭টি কনটেইনার ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। বার্জটিও উদ্ধারের কাজ চলছে। এখন পানগাঁও এক্সপ্রেস উদ্ধারের চেয়ে কর্ণফুলি চ্যানেল বিপদমুক্ত করতে বার্জটি উদ্ধার বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে বার্জডুবির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

 

উল্লেখ্য, জাহাজটিতে ৭২ বক্সে মোট ৯৬ টিইইউস কনটেইনার ছিল। এরমধ্যে দুর্ঘটনার পর পরই তিনটি কনটেইনার ভাসতে দেখা যায়। যার মধ্যে একটি ভাসানচরে আটকে যায়। যেটিতে ছিল চায়না থেকে আনা আর্টিফিশিয়াল ফুল। সেই কনটেইনার কেটে কেউ কেউ সেই ফুল নিয়ে বিক্রিও করে দিয়েছে। আরেকটি কনটেইনার উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড। তবে জাহাজের বাকি কনটেইনারগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না জাহাজটি পরিচালনাকারী সংস্থা সি গ্লোরি লাইন লিমিটেড।

 

তবে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পানগাঁও-চট্টগ্রাম রুটে পরিবহন হওয়া বেশির ভাগ পণ্যই গার্মেন্ট এক্সেসরিজ, র কটন বা সুতার কাঁচামাল এবং কিছু বাণিজ্যিক আমদানি পণ্য। আর ডুবে থাকা অধিকাংশ কনটেইনারে রয়েছে ইস্পাত পণ্য।

 

জাহাজের আইজিএম থেকে জানা গেছে, জাহাজে মায়ের্কস লাইনের ৩৩টি, মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির (এমএসসি) ৩২টি, অল পোর্টের ৯টি, সিএমএ-সিজিএম ছয়টি, সিএসআইয়ের ১০টি, ওওসিএলের তিনটি, একটি ম্যাক্সিকনের কনটেইনার আছে।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট