সড়কজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। গাড়ি চলে হেলেদুলে। বাস, টেম্পো, ট্যাক্সি, মোটরসাইকেল কিংবা রিকশায় যাতায়াত হয়ে উড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিন আহত হচ্ছেন কোন না কোন যাত্রী। এমনই বেহাল দশা নগরীর এশিয়ান হাইওয়ের বহদ্দারহাট হতে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের প্রায় আধা কিলোমিটার পথজুড়ে। নগরীর প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির এমন অবস্থা এক মাসের বেশি সময় ধরে। গর্তে কিছু বালি দিয়ে দায় সেরেছে সিটি কপোরেশন। প্রতিদিনের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ার কারণে চলাচলকারীদের ক্ষোভের শেষ নেই। চালক-যাত্রীদের অভিযোগ, গতমাসে নগরীতে টানা পাঁচদিনের বৃষ্টিতে সড়কের পিচ ওঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের। জনদুর্ভোগ লাগবে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি পথচারী ও এলাকাবাসীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমা সুলতানা তন্নী বলেন, আমার বাসা বহদ্দারহাট এলাকায়। যে কারণে প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় ও টিউশনে এ পথ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। দিনে অন্তত দ্ধুসঢ়;’বার, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস থাকলে কখনো কখনো চারবারও যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু গত একমাস ধরে সড়কের বেহাল অবস্থা। বাস, টেম্পো কিংবা অন্য যে কোনো যানবাহনেই চলাচল করি না কেন, ঝাঁকুনিতে অস্থির হয়ে উঠি। শরীর ব্যাথা হয়ে যায়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা বেগম বলেন, এক মাস আগে বৃষ্টিতে রাস্তার পিচ ওঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তখন থেকেই এ সড়কে যাতায়াত কষ্টকর হয়ে গেছে। যদিও সংস্কার কাজ চলছে দেখছি, কিন্তু কাজ এগুচ্ছে না। এটি যেহেতু নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তাই শীঘ্রই খানাখন্দগুলো ঠিক করে পিচ ঢালাই দেয়া উচিৎ। এসময় তিনি আরো বলেন, অক্সিজেন থেকে স্কুলে আসি। কিন্তু মুরাদপুর থেকে সড়কের যে অবস্থায় আমার শরীর ব্যাথা হয়ে যায়। এ রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াতের কারণে এখন প্রতিদিনই শারীরিকভাবে অসুস্থতাবোধ করি।
ইমরান হোসেন নামের এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় গর্তের কারণে প্রতিদিনই কম বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে ছোট বোনকে নিয়ে মোটরসাইকেলের করে বাড়ি ফিরছিলাম। ফ্লাইওভারের পাশে ভাঙা রাস্তা দিয়ে ছোটবোন মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে খুব আহত হয়। আল্লাহ সহায় ছিল বড় কোনো দুঘর্টনা ঘটেনি। রাস্তায় কাজ চলছে ঠিকই। কিন্তু সড়কের মধ্যে এখনো গর্ত রয়ে গেছে। জনগণের স্বার্থে তাড়াতাড়ি গর্তগুলো পূরণ করে পিচ ঢালাই দেয়া উচিত। তাহলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
এ সড়কের চার নম্বর বাসের চালক সোহেল ফেরদৌস বলেন, এক মাস ধরে সড়কের এমন খারাপ অবস্থা। যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনেই এ পথে গাড়ি চালাচ্ছি। সব যাত্রীদের অবস্থাই খারাপ তবে বয়স্ক যাত্রীদের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। আমাদের কিছু করার থাকে না। গত মাসে একবার গর্তের মধ্যে আমার গাড়িটাও আটকা পড়ে যায়। অনেকক্ষণ পরে সেই গর্ত থেকে গাড়িটা উঠাই।
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সিদ্দিক বলেন, সড়কের মাঝখানে ডিভাইডারের কাজ চলছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝের কাজ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হবে।
পূর্বকোণ/আরডি