চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

টাচ মোবাইল শিশুকে শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে: মুনীর চৌধুরী

জাহেদুল আলম, রাউজান

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মুনীর চৌধুরী বলেছেন, ‘শিশুদের শুধু বইয়ের বোঝা তুলে দিলে হবে না। তাদেরকে সহজভাবে, সৃজনশীলতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা এবং উদ্ভাবনী শিক্ষা দিতে হবে। গভীর মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করাতে হবে। সরকার শিক্ষার উন্নয়নে অনেক কিছু করছেন। শিক্ষকদের নানা সুবিধা দিচ্ছে। কাজেই শিক্ষকদের নৈতিকতার মাধ্যমে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শিশুদের কোনক্রমেই টাচ মোবাইল দেয়া যাবেনা। মোবাইল তাকে শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। বাইরের, দোকানের খাবার খেতে দেবেন না। এগুলো স্বাস্থ্যসম্মত না। শিশুদের জন্য স্কুলে, ঘরে ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করলে তারা সুশিক্ষিত হবে।’

 

তিনি গতকাল শুক্রবার সকালে রাউজানের ঢেউয়া হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের উদ্যোগে বিজ্ঞান সভা এবং টেলিস্কোপ ও স্মারক উপহার প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে উদ্বোধক ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সীমা দাশ। সংগঠক মইনুদ্দীন আল হিমেল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন পৌরসভা আ. লীগের সহ সভাপতি জানে আলম, সমাজসেবক আবদুল্লাহ আল ছগীর। উপস্থিত ছিলেন আবদুল আউয়াল সুজন, তৌহিদুল ইসলাম, শিক্ষিকা বিউটি বড়ুয়া, নিশাত সুলতানা, সুমি পালিত, মানু চৌধুরী, মৌনি বড়ুয়া, ইমু দাশ, ইমতিয়াজ বাবুল, নুরুল আমিন।

 

মুনীর চৌধুরী প্রতিটি স্কুলে সততা স্টোরের প্রয়োজনীতা উল্লেখ করে বলেন, ‘বিজ্ঞানকে সদ ব্যবহার করতে হবে। সারাদিন পড়া নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা, মাঠে খেলা প্রতিযোগিতা করতে হবে শিশুদের নিয়ে। তাদেরকে নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, আদব, কায়দা শেখানো, পিকনিক, বিনোদনের পাশাপাশি নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে। এজন্য শিক্ষকদের কর্তব্যপরায়ন হতে হবে।’ তিনি আরো বলেন,‘আমার দাদা মাস্টার রহুল আমিন চৌধুরী রাউজান স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তারা অনেক দূর থেকে এসে শিক্ষা দিতেন। অনেক কষ্টের জীবন ছিল। আজকে প্রযুক্তির বদৌলতে নতুন প্রজন্ম অনেক সুযোগ পাচ্ছে। সেটিকে কাজে লাগাতে হবে।’ দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. ম. রমিজউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, রাউজানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে শিক্ষার মানও আরো উন্নত করতে হবে। তাতে রেজাল্ট আরো ভালো হবে। শিশুদের সুশিক্ষিত করে তোলতে হবে। তিনি বলেন, ঢেউয়া হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একসময় মাটির ছিল। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে অনেক পুরনো স্কুলটি অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নতি হয়েছে। অনেকের অনুদান ও আল্লাহর অশেষ কৃপায় এই স্কুল আজ এ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি শিশুদের উৎসাহ প্রদানের জন্য বিভিন্ন উপহার প্রদান করায় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের মহা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মুনীর চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা খোরশেদুল আলম। এতে বক্তারা এলাকার কৃতীসন্তান  দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্থপতি তসলিম উদ্দীন চৌধুরীকে স্মরণ করেন। পরে প্রধান অতিথি জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের পক্ষ থেকে ঢেউয়া হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি টেলিস্কোপ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য চীনে তৈরি ছাতা, পাটের স্কুল ব্যাগ উপহার দেন। অনুষ্ঠানে মুনীর চৌধুরী মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য আগামীতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢেউয়া হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি টেলিস্কোপ স্থাপন ও স্কুলটি হাইস্কুলে উন্নীত হলে একটি বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট