চট্টগ্রাম রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

সর্বশেষ:

সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা, শাশুড়ি গ্রেপ্তার
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

সীতাকুণ্ডে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ড সংবাদদাতা

২১ জুন, ২০২৫ | ৯:৪৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন শেষে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

 

এ ঘটনায় শনিবার (২১ জুন) বিকালে নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় স্বামী-শাশুড়িকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

এদিকে এর আগে শনিবার দুপুরে এ গৃহবধূর হত্যাকারীদের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী।

 

শনিবার দুপুরে সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূর পরিবার ও এলাকাবাসী।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সীতাকুণ্ডের উত্তর বগাচতর এলাকার বাসিন্দা ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল যাকারিয়া এবং নিহতের মেঝ ভাই নুর নবী জানান, ১০ বছর আগে মিরসরাইয়ের সোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা নুরুল আবছারের মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে সীতাকুণ্ডের বগাচতর এলাকার নুরুল মোস্তফার ছেলে মুসলিম উদ্দিন বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা আক্তারকে তার স্বামী মুসলিম শারীরিক নির্যাতন করতেন। স্বামীর পাশাপাশি ফাতেমা আক্তারের উপর শাশুড়ি ও ননদ নির্যাতন চালাতো। গত ১৪ জুন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামী মুসলিম উদ্দিন ফাতেমা আক্তারকে মারধর করেন। পরে নিজ ঘরে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে আর্তচিৎকার করতে থাকেন ফাতেমা। আগুনে তার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেলে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করার পর গত (১৮ জুন) বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

 

এদিকে ফাতেমার শরীর অগ্নিদ্বগ্ধ হবার পর পালিয়ে যান স্বামী মুসলিম উদ্দিন। এমনকি বৃহস্পতিবার ফাতেমাকে দাফন করা হলে সেখানেও উপস্থিত হননি।

 

ফাতেমার ভাই নুর নবী অভিযোগ করে আরও বলেন, বোনের উপর নিয়মিত নির্যাতন হলেও তিনটি ছোট ছেলের দিকে তাকিয়ে সে সংসার করে গেছে। তাকে চলে আসার জন্য বললে সে বলত, আমার সন্তানদের ছেড়ে কিভাবে যাব? কিন্তু ঐ পাষণ্ডরা তাকে চিরতরে চলে যেতে বাধ্য করল! আমরা তাদের বিচার চাই।

 

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেও শনিবার বিকালে এ ঘটনায় মামলা নিয়েছে পুলিশ।

 

ভুক্তভোগীর পিতা নুরুল আফছার বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফাতেমা আক্তারের শাশুড়ি সাজেদা আক্তার ও তার স্বামী মুসলিম উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।

 

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান জানান, অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ১ নম্বর আসামি সাজেদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। মামলার অপর আসামি নিহতের স্বামী মুসলিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

 

অন্যদিকে এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, উত্তর বগাচতর একালার বাসিন্দা মহিবুর রহমার শওকত, খাইরুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন ও নেছার উদ্দিন মেজবা।

 

পূর্বকোণ/সৌমিত্র/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট