কক্সবাজারের মহেশখালীতে পেকুয়া মৌজার লম্বাঘোণার লবণমাঠ দখলের চেষ্টা ও পেকুয়া এবং চকরিয়ার প্রভাবশালীরা নিরীহ লবণ চাষিদের উপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া লবণ মাঠে গুলিবর্ষণ, অস্ত্রের মুখে সুইসগেট দিয়ে পানি ঢুকিয়ে ও তাণ্ডব চালিয়ে ৩০ লক্ষাধিক টাকার লবণ মাঠ ডুবিয়ে দেওয়াসহ প্রজেক্টের বাসায় লুটপাট ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীদের, উজান্টিয়ার ওয়াজউদ্দিন মেম্বার, বদর খালীর ভুট্টো মেম্বার, সাব্বিরসহ বেশ কয়েকজন বিএনপির নাম ব্যবহার করে এই অপরাধ চালিয়েছে। ঐ ব্যক্তিরা এক বিএনপির নেতার প্রেস সহকারীর আত্মীয় হওয়াতে তারা বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শ্রমিকবৃন্দ সহ উক্ত প্রজেক্টের ইজারাদারেরা৷
সোমবার (২০ জুন) বিকেল ৩টায় কালারমারছড়া উত্তর নলবিলায় সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে ভুক্তভোগী বোরহান উদ্দিন, ছোটনসহ অনেকেই এসব অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী যুবদল নেতা বোরহান উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লম্বাঘোনা এলাকায় একটি লবণ চাষের প্রকল্প পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দখলের জন্য বিএনপির নাম ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এই প্রভাবশালীরা পুলিশকে ব্যবহার করে তার ব্যবসায়ে বাধা দিচ্ছে এবং তার পরিবারের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা দাবি করেন- প্রভাবশালীরা পেকুয়া থানার পুলিশকে কাজে লাগিয়ে তাদের লবণের মাঠে অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাফা কামাল নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সুনামের ব্যবসা করে আসছি। কোন দখল বা মারামারিতে কখনও যুক্ত ছিলাম না কিন্তু ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থেকেও অনেক দূরে অবস্থান করেও পেকুয়া মোজায় অবস্থিত লম্বাঘোনাকে কেন্দ্র করে একটি মিথ্যা মামলায় আমাকে ও আমার ৭৬ বছর বয়সী বাবা হারুন তাহেরের নাম তালিকায় দেওয়া তা দুঃখজনক। এভাবে যাচাই-বাছাই না করে একটি পক্ষ থেকে টাকা বা সুযোগ সুবিধা নিয়ে নিরীহ মানুষদের মামলায় হয়রানি করা ৩৬ জুলাইয়ের স্বাধীন হওয়া দেশের সভ্য মানুষের দ্বারা হতে পারে না। এ বিষয়ে দ্রুত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আমি লিখিত অভিযোগ করব। যাতে আমার মতো কেউ অযথা হয়রানি না হয়।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ জানান, অযথা কোন নিরীহ ব্যক্তি যাতে কোন মিথ্যে মামলায় হয়রানি না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। যদি কেউ পুলিশ কর্তৃক বা কোন ব্যক্তি কেন্দ্রীক অন্যায়ের শিকার হয় সেটি লিখিত জানালে তদন্ত সাপেক্ষে সেটি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় শতাধিক লবণ চাষিসহ ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
পূর্বকোণ/ইব