চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে প্রতিবছর রমজানের শুরুর দিন থেকে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ ইফতার করেন। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মসজিদে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রোজাদারদের জন্য সকাল থেকে বিভিন্ন ইফতারি তৈরি করেন বাবুর্চিরা। পরে বিকেল থেকে মসজিদের এক পাশে লম্বা টেবিলে থরে থরে সাজানো গামলা থেকে প্লেটে প্লেটে ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি আর জিলাপি বেড়ে রাখেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। বিকেল ৫টার দিকে শুরু হয় ইফতারের প্রস্তুতি। ছাত্র থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, সমাজের অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষের পাশে ভিক্ষুক, রিকশাওয়ালা, হকারসহ নানা বয়সীরা একসাথে বসে পড়েন।
২০০১ সাল থেকে এভাবেই ইফতারের আয়োজন শুরু হয় মসজিদটিতে। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় বড় আকারে মক্কা-মদিনার আদলে গণ-ইফতার। এখন রোজার শুরুর দিকে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ এখানে নিয়মিত ইফতার করেন। রমজানের শেষ দিকে সেই সংখ্যা চার হাজারে পৌঁছায়।
আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদের খতিব আওলাদে রাসুল (স.) হযরত মাওলানা আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরি আল মাদানী জানান, ১৯৯৭ সালে প্রাথমিকভাবে শুরু করে ২০০১ সালে এটি পরিপূর্ণ ইফতার মাহফিল হয়ে উঠে। পর্যায়ক্রমে এটি এখন গণ-ইফতারে রূপ লাভ করেছে।
খতিবের ব্যক্তিগত সহকারী মুহাম্মদ হাছান মুরাদ জানান, রোজা শুরুর প্রথম কয়েক দিন মানুষ কম হলেও রোজা বাড়ার সাথে সাথে মানুষ বৃদ্ধি পায়। এখানে সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয় ইফতারি। টাটকা ও স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারি যাতে সবাই খেতে পারেন সেই চেষ্টা করা হয়।
প্রসঙ্গত, আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদ চট্টগ্রামসহ তার আশপাশের মানুষের আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার মসজিদে রূপ নেয়। বিশেষ করে জুমআর নামাজ পড়তে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এ মসজিদে মুসল্লিরা উপস্থিত হন। আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের স্থাপত্য ও গঠন মোগল রীতি অনুযায়ী তৈরি। সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩০ ফুট উপরে ছোট্ট পাহাড়ের ওপর মসজিদটির অবস্থান।
চট্টগ্রামে মুসলিম বিজয়ের স্মারকস্বরূপ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদটি। এটির প্রতিষ্ঠাকাল ১০৭৮ হিজরি।
পূর্বকোণ/ইব