গেল বছরের ডিসেম্বর মাসেও চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশি-বিদেশি ছয়টি উড়োজাহাজ প্রতিদিন ওমরা যাত্রী পরিবহন করেছিল। অথচ চলতি বছরের একই সময়ে ওমরা যাত্রী পরিবহন করছে তিনটি এয়ারলাইন্স। তারমধ্যে দেশীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সরাসরি সৌদিআরব গেলেও সপ্তাহে ফ্লাইট যাচ্ছে মাত্র তিনটি। বাকি দুটি অন্য দেশের যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে সৌদিআরব। তাতে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি যাত্রীদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
ওমরা মৌসুমের মধ্যেও ফ্লাইট সংকটের এমন পরিস্থিতির কারণে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের ওমরা যাত্রী এবং তাদের সেবাপ্রদানকারী এজেন্সিগুলো। অবশ্য, যাত্রীদের এমন বেহাল অবস্থা নিরসনে চট্টগ্রাম থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরও ফ্লাইট বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সপ্তাহে চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে তিনটি নিয়মিত এবং চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে একটিসহ চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করত রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বর্তমানে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার মদিনা-চট্টগ্রাম একটি ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ওমরাযাত্রীদের আসন সংকটে পড়তে হয়।
অন্যদিকে, দুটি বিদেশি এয়ালাইন্স ওমরা যাত্রী পরিবহন করলেও ট্রানজিটের সময় একটি বিমানের ৬-৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করা এবং অন্যটির টিকিট মূল্য বেশি হওয়ায় যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না বলে জানান এজেন্সিগুলোর মালিকরা।
হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) চট্টগ্রাম জোনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘যেহেতু চট্টগ্রাম থেকে সৌদি আরবের সরাসরি অন্য কোন ফ্লাইট নেই, তাই বিমান বাংলাদেশ চাইলে রুটটিতে কমপক্ষে আরও দুই-তিনটি ফ্লাইট বাড়াতে পারে। এ রুটে ফ্লাইট বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আগে অন্য বিমানারে কানেক্টিং ফ্লাইট দিয়ে যাতায়াত করলেও কয়েকটি এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে বিপাকে আছেন ওমরা যাত্রীরা। বর্তমানে যে সংকট তৈরি হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ চাইলে তা পূরণ করতে সক্ষম।
এজেন্সি মালিকেরা জানান, বছরের শেষ এবং শুরুতে স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসে পবিত্র ওমরা পালনকারী যাত্রীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় একটু বেশি থাকে। আবার সৌদিআরব রুটে সাধারণ যাত্রী এবং ওমরা যাত্রীদের চাপে আসন সংকট তৈরি হয়। এরমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট বন্ধ। সবমিলিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে।
আটাব চট্টগ্রাম জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু জাফর এবং সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া স্বাক্ষরিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, চলমান ওমরা মৌসুমে অধিক সংখ্যক ওমরা যাত্রীদের চাপের কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইটে যাত্রীদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ফ্লাইটটি পুনরায় চালুর পাশাপাশি ডিসেম্বর থেকে আরও দুটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিমান বাংলাদেশ চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপক আল মামুন ফারুক বলেন, ‘আটাবের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠি প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়তই যোগাযোগ চলছে। কর্তৃপক্ষও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সবকিছু হুট করে হয় না। অনেকগুলো সিস্টেম আছে। যা কিছু করতে হবে প্রসিডিউর মেনেই করতে হবে। আমরাও চাই কিছু করার। এখন বাকি সিদ্ধান্ত হচ্ছে কর্তৃপক্ষের।’
পূর্বকোণ/পিআর