চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

শর্ত কমিয়ে আবারো টেন্ডারে ঘোড়াশাল আইসিডি প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল এলাকায় ২০ একর জমিতে একটি মাল্টিমোডাল ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছিল কনটেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল)। ওই প্রকল্পের জন্য প্রথমবার গত ১০ জানুয়ারি দরপত্র আহ্বান করেছিল। এরপর গত মে মাস পর্যন্ত দুবার দরপত্রের সময় পরিবর্তন করেও সাড়া পায়নি সিসিবিএল।

 

তাই এবার দরপত্রের শর্ত শিথিল করে পুনরায় টেন্ডারে গেছে ঘোড়াশাল আইসিডি প্রকল্প। গতকাল পুনরায় ঘোড়াশাল আইসিডি প্রকল্প টেন্ডার প্রকাশ করেছে সিসিবিএল। কনটেইনার কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) ডিজাইন-বিল্ড-ফাইনান্স-অপারেট-মেইনটেইন-ট্রান্সফার (ডিবিএফওএমটি) ভিত্তিতে এই মাল্টিমোডাল আইসিডিটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ৩০ হাজার টাকা পে-অর্ডার করে এই দরপত্র কেনা যাবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সেটি জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা এবং টেন্ডার বক্স খোলা হবে তার ১৫ মিনিট পর।

 

প্রথম দফায় এই প্রকল্পের টেন্ডারে ১২টি কোম্পানি দরপত্র ফরম কিনলেও তাদের কেউই কঠিন শর্তের কারণে দরপত্র জমা দেয়নি। পাশাপাশি তারা কিছু প্রস্তাবনাও দেয় সিসিবিএল’কে। এবার সেই কঠিন শর্ত শিথিল করেই পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- টার্মিনাল পরিচালনার সময়কাল ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে, চুক্তি স্বাক্ষর ফি ১০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি টার্মিনাল পরিচালনার লভ্যাংশ ভাগাভাগি টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারণের সুযোগ করা হয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে সিসিবিএল কোম্পানি সেক্রেটারি মো. রাকিবুল ইসলাম কমল বলেন, প্রথম দফার টেন্ডারে স্থানীয় কোম্পানি যেমন সাইফ পাওয়ারটেক, সামিট গ্রুপ, ম্যাক্স গ্রুপ এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানি পিএসএ সিঙ্গাপুরসহ ১২টি কোম্পানি টেন্ডার ফরম কিনেছিল। তবে টেন্ডারের কিছু শর্তে তাদের আপত্তি ছিল, যার কারণে তারা ওই সময় টেন্ডার জমা করেনি। এবার সেই সব শর্ত শিথিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ২০ হাজার বর্গমিটার জমিতে এই আইসিডি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যেখানে বার্ষিক প্রায় ১ লাখ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা যাবে। এটি তৈরি হলে আশেপাশের কারখানা এবং সেখান থেকে কাঁচামাল ও পণ্য পরিবহন সহজ হবে। আশেপাশের শিল্প এলাকার কার্গো চলাচলের চাহিদা মেটাবে। ২০২৬ সালের মধ্যে অবকাঠামো প্রস্তুতের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে এই প্রকল্পে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের অধীনে নির্মাণের পর ৩০ বছরের জন্য আইসিডি পরিচালনা করবে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান। তারপর এটি সিসিবিএলের কাছে হস্তান্তর করবে। বিল্ডার এবং সিসিবিএল এই সময়ের মধ্যে লাভ ভাগ করবে।

 

রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘোড়াশাল একটি শিল্পাঞ্চল এবং সেখান থেকে পণ্য পরিবহনের চাহিদা প্রতি বছরই বাড়ছে। এটি নির্মিত হলে, ডিপোটি পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ ও গাজীপুর জেলার কারখানায় এবং সেখান থেকে কনটেইনারযুক্ত পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে সক্ষম হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকায় একটি কমলাপুর আইসিডি রয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে স্থানান্তরিত করা হবে গাজীপুর জেলায়। এছাড়া আইনি জটিলতার কারণে চট্টগ্রামে আরেকটি রেল-আইসিডি নির্মাণের প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।

 

উল্লেখ্য, ভারত থেকে কনটেইনার পরিবহনের সুবিধার্থে সিরাজগঞ্জ জেলার অন্তর্গত যমুনা নদীর পশ্চিম তীরে আরও একটি আইসিডি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। কেননা বাংলাদেশ ভারত থেকে বছরে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট