চট্টগ্রাম সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম কাস্টমস

মেয়াদোত্তীর্ণের ৯ দিন আগে নিলামে উঠছে ২৮ টন মাংস!

একইদিন নিলামে তোলা হবে ৬৩ টন হিমায়িত মাছ ও সাড়ে ১৮ টন আদা

সারোয়ার আহমদ

২২ নভেম্বর, ২০২৩ | ৪:০৬ অপরাহ্ণ

মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার ঠিক নয়দিন আগে ভারত থেকে আসা ২৮ হাজার ৪০ কেজি হিমায়িত মহিষের মাংস নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রকাশ্য নিলামে তোলা হবে এই মাংস।

 

তবে এই মাংস আগামী ২ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। মাংসের সংরক্ষিত মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ২৩৫ টাকা। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার ঠিক নয়দিন আগে ২৮ টনের বেশি এই মাংস নিলামে বিক্রি হলেও তা খাওয়ার উপযুক্ত থাকবে কিনা তাতে সন্দেহ প্রকাশ করছে নিলাম সংশ্লিষ্টরা। যার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নিলামে সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারীর মূল্যে এই মাংস বিক্রি করা হবে কিনা তা সিদ্ধান্ত হবে নিলাম কমিটির সভায়। সেই প্রস্তাবে সম্মতি মিললেও কাস্টমসের অর্থ পরিশোধ করে বন্দর থেকে সেই মাংস খালাস নিতেই মাংসের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভবনাই বেশি।

 

কাস্টমসসূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে প্যাকিং হওয়া এক হাজার ৭শ কার্টনে ভারত থেকে এই মাংস আসে চলতি বছরের শুরুতে। নারায়গঞ্জের গাবতলির উত্তর মাসদাইরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমবি ট্রেডিং এই মাংস আমদানি করলেও চালানটি খালাস না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ৩ মার্চ এই মাংস নিলাম যোগ্য বলে আর এল ভুক্ত করে।

 

এমভি এইচ আর এরি জাহাজে আসা ওই মাংস ২৭ মার্চ পচনশীল পণ্য হিসেবে দ্রুত ইনভেন্ট্রি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডেই হিমায়িত কনটেইনারে থেকে যায় ওই মাংস। এবার সেটি মেয়াদ ফুরানোর নয়দিন আগে নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা।

 

এই মাংস ছাড়াও আগামীকাল একইদিন সকালে নিলামে উঠছে দুটি আলাদা লটে প্রায় ৬৩ টন মাছ ও সাড়ে ১৮ টন আদা। নিলামের আগে আজ বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কার্যালয়ের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় মাইকিং করে মাংস, মাছ ও আদার নিলামের প্রচারণা চালানো হবে।

 

কাস্টমসসূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২২ নম্বর প্রকাশ্য নিলামে রাখা হয়েছে ৫২ হাজার ২৬০ কেজি রুপচাঁদা (সিলভার পমফ্রেট) মাছ। নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন ফিশারিঘাটের প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিক এন্ড ব্রাদার্স এই মাছ মিয়ানমার থেকে আমদানি করে। চালানটি খালাস না হওয়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ১০ আগস্ট নিলামের জন্য আরএল ভুক্ত করে। যা ২০ সেপ্টেম্বর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামের জন্য ইনভেন্ট্রি করে। পাঁচ হাজার ২শ কার্টনে থাকা এই মাছের সংরক্ষিত মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ১৬ টাকা।

 

এছাড়া ভিন্ন আরেক নিলামে (নিলাম নং-২১) উঠছে ১০ হাজার ৬৭০ কেজি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এসবের মধ্যে রয়েছে পাঙ্গাস, অক্টোপাস, বিভিন্ন প্রজাতির ঝিনুক, স্যালমন ও স্ক্যালপ ফিস। রাজধানীর বনশ্রীর ৪ নম্বর রোডের প্রতিষ্ঠান আই এম এন কর্পোরেশন এই চালান আমদানি করে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামে এর সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেছে ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৩৪২ টাকা।

 

অন্যদিকে, একইদিন ২৩ নম্বর নিলামে উঠছে ১৮ হাজার ৫৯০ কেজি আদা। যার সংরক্ষিত মূল্য ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৩৫৭ টাকা।

 

জানা যায়, নগরীর শেখ মুজিব রোডের প্রগ্রেসিভ টাওয়ারের প্রতিষ্ঠান আল হোসাইন ট্রেডিং এই আদা আমদানি করে। চালানটি বন্দর থেকে খালাস না হওয়ায় গত ৩০ আগস্ট বন্দর কর্তৃপক্ষ সেটি নিলামের জন্য আরএল ভুক্ত করে। যা কাস্টমস থেকে ৫ নভেম্বর ইনভেন্ট্রি করা হয়। এই আদা, মাংস ও মাছ আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করবে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট