চট্টগ্রাম বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কোস্ট গার্ডের ‘মনসুর আলী’ বাঁচাল ১৮ জেলের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ নভেম্বর, ২০২৩ | ১২:১১ পূর্বাহ্ণ

গভীর সাগরে গিয়েছিল মায়ের দোয়া নামের মাছ ধরার ট্রলার। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কবলে পড়ে ভেঙে যায় ট্রলারের পাখা। তারপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভাসতে থাকে সাগরে। জেলেরা ছেড়ে দেয় বেঁচে থাকার আশা। হঠাৎ তাদের মনে হয় জরুরিসেবা নম্বর ৯৯৯-এর কথা।

 

তখন তারা জরুরিসেবায় কল দিয়ে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে। পরে খবর পেয়ে ১৮ জেলেকে উদ্ধার করে কোস্ট গার্ডের জাহাজ ‘মনসুর আলী’।

 

শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর কোস্ট গার্ড স্টেশনের জেটিতে আনা হয় সাগরে আটকে পড়া জেলেদের।

 

কোস্ট গার্ড কক্সবাজার স্টেশনের পরিদর্শক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম সালমান সিদ্দিকী স্বাধীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

কোস্ট গার্ডের জেটিতে কথা হয় ট্রলারের জেলে ইমাম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চার বছর ধরে সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করছি। এবারই প্রথম সাগরে গিয়ে বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

 

ট্রলারের মাঝি বাচাঘোনার এলাকার রুহুল আমিন জানান, কক্সবাজার শহরের মাঝির ঘাট থেকে মায়ের দোয়া ট্রলার মাছ শিকারে সাগরে যায় ১৪ নভেম্বর। কক্সবাজার থেকে ১০০ কিলোমিটার গভীর সাগরে যান ১৮ জেলে। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ের আভাস, সঙ্গে উত্তাল সাগর। উপকূলে ফিরে আসার পথেই ভেঙে যায় পাখা।

 

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দমকা হাওয়া ও বিশাল ঢেউ আঘাত করতে থাকে আমাদের ট্রলারে। জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরব সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহ রহমতে, রাখে আল্লাহ মারে কে এক বচন রয়েছে; ঠিক তেমনি আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন। লাখো শুকরিয়া আল্লাহর কাছে, আর ধন্যবাদ জানায় কোস্ট গার্ডকে। সঠিক সময় দিয়ে তারা আমাদের উদ্ধার করেছেন।’

 

জেলেদের অবস্থা জানতে পেরে তাদের উদ্ধার করার জন্য আরেকটি ট্রলার নিয়ে সাগরে গিয়েছিলেন ট্রলার মালিক খুরুশকুল এলাকার মোস্তাক আহমদ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফিরে আসতে হয় তীরে। পরে প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলেরা উদ্ধার হওয়ায় ধন্যবাদ জানান তিনি।

 

কোস্ট গার্ড কক্সবাজার স্টেশনের পরিদর্শক এম সালমান সিদ্দিকী স্বাধীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে কোস্ট গার্ড স্টেশন কক্সবাজার, ইনানী ও কোস্ট গার্ডের নিয়মিত টহল ‘অপারেশন সমুদ্র প্রহরায়’ নিয়োজিত কোস্ট গার্ড জাহাজ মনসুর আলীর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ তারিক আজিজের নেতৃত্বে সমুদ্র থেকে জেলেদের উদ্ধার করা হয়।’

 

তিনি বলেন, অভিযান চলাকালীন শুক্রবার দিবাগত রাত ২টায় কক্সবাজার লাইট হাউস থেকে আনুমানিক ২১ নটিক্যাল মাইল গভীরে সমুদ্র এলাকা থেকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি ভাসতে থাকে। জেলেদের উদ্ধারের পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও খাবার দেওয়া হয়। পরে কোস্ট গার্ড জাহাজের মাধ্যমে জেলেসহ ট্রলারটিকে কক্সবাজার উপকূলে নিয়ে আসা হয়। ফিশিং বোটের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেলেদের তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 

পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট