চট্টগ্রাম রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

সর্বশেষ:

ফটিকছড়িতে থেমে নেই নির্বিচারে বালু লুট
ছবি: পূর্বকোণ

ফটিকছড়িতে থেমে নেই নির্বিচারে বালু লুট

এস.এম মোরশেদ মুন্না, নাজিরহাট

২১ জুন, ২০২৫ | ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ির নদী ও বিভিন্ন খাল হতে নির্বিচারে লুট হচ্ছে বালু। বৈধ বালুমহাল গুলোতেও মানা হচ্ছে না নিয়ম-কানুন। এতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় দিনদিন বেপরোয়া হচ্ছে বালুখেকোরা। ফলে শতবর্ষী মসজিদ, মাদ্রাসা, কৃষিজমি, বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে উপজেলার নদী ও খাল পাড়ের মানুষ।

 

উপজেলাতে আনুমানিক ২০টির মতো ইজারাকৃত বালু মহাল রয়েছে। এতে অধিকাংশ বালু মহালে নিয়ম-কানুন মেনে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না। ইজারার শর্তে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও অধিকাংশ বালু মহালে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু মহালগুলোতে নদী-খালের সাথে দীর্ঘ পাইপের সাহায্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রকাশ্যে বালু তোলা হচ্ছে।

 

এছাড়াও উপজেলার নদী-খালের বিভিন্ন পয়েন্টে ইজারাবিহীন যে যেখান থেকে পারে বালু উত্তোলন করছে। এতে ভূমি মালিক ও বালুখেকোদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, এমনকি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না দেখে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন স্থানীয় জনগণ। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে এবং উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেছে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

 

 

সম্প্রতি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নে হালদা নদী হতে নৌকা নিয়ে বালু তুলতে আসা একদল দৃষ্কৃতকারী এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে নৌকা নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়া উপজেলার খিরাম ইউনিয়নে স্থানীয় বাসিন্দারা রাতে উঠান বৈঠক করে বালু খেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে সর্তাখাল পাহারা দিচ্ছেন।

 

এদিকে অনিয়মতান্ত্রিক বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার বুকচিরে বয়ে যাওয়া ধুরুং খাল, সর্তা খাল, লেলাং খাল, গজারিয়া খাল, রুপাই খাল, বারমাসিয়া খাল ও হালদা নদী পাড়ের মানুষ। এসব এলাকার মানুষ নদীখালের গর্ভে ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার আতঙ্কে দিন পার করছেন।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশ্যে পাইপ লাইন বসিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। প্রশাসনের কোন অভিযান নাই। যখন যে সরকার দেশে ক্ষমতায় আসে, সে সরকারের লোকজন উপজেলার বালু মহাল নিয়ন্ত্রণ করে। বালু খেকোদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় দিন দিন এ অপরাধ বেড়েই চলছে।

 

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাচ্ছি কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে এবং ইজারাকৃত বালু মহালে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করছে। প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছি, অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, অবৈধ বালু মহালের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। নতুন কোন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

পূর্বকোণ/ইবনুর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট