চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে নির্বাচনে ৮ প্রার্থী থাকলেও এখন পর্যন্ত সাধারণ ভোটারদের যত হিসাব-নিকাশ আওয়ামী লীগ প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এবং স্বতন্ত্রের আবরণে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়বকে ঘিরে।
এ দুই প্রার্থী মাঠে গণসংযোগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কাছে টানার রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছেন। নিজ দলের দুই প্রার্থীকে নিয়ে অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেছেন। আবার অনেকে নির্বাচনে কোন প্রার্থী বিজয়ী হবেন তা নিয়ে পড়ে গেছেন দোটানায়।
কারণ এ মুহূর্তে সিদ্ধান্তে ভুল করলে পরে রাজনীতিতে মাশুল দিতে হবে বেশি। তাই কোন দিকে পা বাড়াবেন তা নিয়ে তারা কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছেন। আবার এ দুই প্রার্থীকে ঘিরে আওয়ামী লীগের অনেকে আপাতত নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।
ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের কন্যা ও বর্তমান সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এবার ফটিকছড়ি আসনে পেয়েছেন দলীয় প্রতীক নৌকা। এ আসনে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারীকে গত দুইবারের (২০১৪ ও ২০১৮) সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না দিয়ে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ।
স্বাভাবিকভাবে এবারও সাধারণ ভোটারেরা মনে করেছিলেন তাকেই আওয়ামী লীগ সমর্থন দেবে। কিন্তু এবার তার ব্যত্যয় ঘটে। সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারীকে সমর্থন না দিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থী দেয়। খাদিজাতুল আনোয়ার সনি হচ্ছেন এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী। নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব। তার প্রতীক তরমুজ। ফটিকছড়ি উপজেলায় তার রয়েছে ব্যাপক কর্মী-সমর্থক। অপরদিকে, আওয়ামী লীগের সমর্থন থাকায় খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতার সমর্থন রয়েছে। তবে আবু তৈয়বের মতো তৃণমূলে তার কর্মী-সমর্থক তুলনামূলক কম। তাই স্থানীয় ভোটারদের মতে, ফটিকছড়ি আসনে এ দুই প্রার্থীর মধ্যে হাডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তাছাড়া উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজের কাছে টানতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন এ দুই প্রার্থী। মাঠে গণসংযোগের চেয়ে তারা দলীয় কর্মীদের নিজের পক্ষে নিতে সময় ব্যয় করছেন বেশি। নির্বাচনে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহানও কম যান না। তিনিও নির্বাচনে ঈগল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। এলাকায় তারও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী ফুলের মালা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। গত দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে খুব সহজে নির্বাচনী বৈতরণী পার হলেও এবার তাকে বেশ বেগ পেতে হবে বলে জানিয়েছেন ভোটারেরা। এ কারণে ভোটারদের মাঝে তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে খুবই কম। ইতোমধ্যে তিনি বাড়িতে নির্বাচনী প্রস্তুতিসভা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করছেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ একতারা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ইসলামিক ফ্রন্টের মীর মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম। তার দলীয় প্রতীক চেয়ার। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাতীয় পার্টির মো. শফিউল আজম চৌধুরী। ইসলামী ফ্রন্টের মো. হামিদ উল্লাহ নির্বাচন করছেন মোমবাতি প্রতীক নিয়ে।
নির্বাচনে এখনও বেশিরভাগ প্রার্থী পোস্টারও বের করেননি, চোখে পড়ছে না গণসংযোগও।
পূর্বকোণ/পিআর