দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ডখ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক চলছে বলে মনে হলেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি হতে পারে এই বন্দরে। কারণ ৫৩ হাজার ৫১৮ একক কনটেইনার ধারণক্ষমতার এ বন্দরে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ছিল ৪৩ হাজার ৮২৭ একক কনটেইনার।
অর্থাৎ, বন্দরের ধারণক্ষমতার ৮১ দশমিক ৮৯ শতাংশ কনটেইনারে পূর্ণ। বাকি ১০ হাজারের কাছাকাছি কনটেইনার রাখার জায়গা থাকলেও কনটেইনার নিয়ে গাড়ি মুভমেন্টের জন্য কিছু জায়গা ছাড়লে দেখা যাবে আট হাজারের বেশি কনটেইনার আর এ বন্দরে রাখা যাবে না।
অপরদিকে, বন্দরে থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বহির্নোঙরে আরও ১৭টি জাহাজে ২২ হাজার ৬২৬ একক কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামার অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু যে গতিতে বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি হচ্ছে তাতে পাইপলাইনে থাকা জাহাজের কনটেইনার রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।
মূলত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে জারি করা অধ্যাদেশের প্রতিবাদে কাস্টমস কর্মকর্তাদের লাগাতার কর্মবিরতি, বিভিন্ন অফডকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি আদায়ে আন্দোলন ও চট্টগ্রাম বন্দরের আরোপিত চারগুণ স্টোর রেন্টের কারণেই চট্টগ্রাম বন্দরে এ কনটেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে আসন্ন ঈদের টানা ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। এ সময়ে বন্দর চালু রাখা হলেও কলকারখানায় ছুটি থাকার কারণে পণ্য ডেলিভারি হয় খুবই নগণ্য। তাই ঈদের ছুটির ফাঁদে বন্দরে মারাত্মক জট সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।
এ প্রসঙ্গ চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ১৫ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত টানা ১১ দিন কর্মবিরতি পালন করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে চলা এ কর্মবিরতির কারণে দেশের সর্ববৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসেও তৈরি হয় অচলাবস্থা। আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্কায়নসহ সবধরনের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। এতে মারাত্মক ভোগান্তির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন আমদানি ও রপ্তানিকারকরা। কাস্টমসের আন্দোলনের কারণে ব্যবসায়ীরা কেন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন? কেন ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে না পারায় চারগুণ স্টোর রেন্ট দিতে হবে? এটা কোন সভ্য দেশের ব্যবসায়ী পলিসি হতে পারে না। একটা আতঙ্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা দেশের ব্যবসাবাণিজ্য অচল করে দেওয়ার পাঁয়তারা ছাড়া আর কিছুই না। বুঝে না বুঝে আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।
এদিকে, বন্দরের আসন্ন এ অচলাবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার পূর্বকোণকে বলেন, বর্তমানে অফডকগুলো প্রায় শতভাগ রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে এবং ৫০ ধরনের আমাদানি পণ্য হ্যান্ডলিং করে। দেশের ১৯টি অফডকে বর্তমানে ৯৫ হাজার একক কনটেইনার ধারণক্ষতার বিপরীতে আমদানি, রপ্তানি ও খালি কনটেইনার মিলে ৭৬ হাজার ৮৬৪ একক কনটেনার রয়েছে। অফডকগুলোর বাকি প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার একক কনটেইনারের জায়গা বন্দর ও কাস্টমস চাইলে দেশের স্বার্থে করোনাকালীন সময়ের মতো ব্যবহার করতে পারে। ওই সময়ে বন্দরের জট কমাতে সবধরনের এফসিএল কনটেইনার ডিপোগুলোতে পাঠিয়ে বন্দরকে রক্ষা করা হয়েছিল। এই অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে।
অফডকগুলোর খালি জায়গা কনটেইনার রাখার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে
দেশের বেসরকারি অফডকগুলোর সক্ষমতা আছে। সেই পরীক্ষা অফডকগুলো করোনাকালীন সময়ে সফলভাবে দেখিয়ে এসেছে। করোনার ওই মহামারির সময় যখন বন্দরের অভ্যন্তরে আর একটিও কনটেইনার রাখার জায়গা ছিল না, ঠিক সেই সময়ে বিকল্প হিসেবে অফডকগুলোর খালি জায়গা বন্দরের বৃহৎ স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থে কাজে এসেছিল। সেই অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে।
ওই সময় বন্দরের সুপারিশে এনবিআর তাৎক্ষণিক এক চিঠির মাধ্যমে সব ধরনের আমদানি পণ্য অফডকে হস্তান্তর ও ডেলিভারির আদেশ জারি করেছিল। সেই সময় দেশের ১৯টি অফডকের খালি জায়গায় নেওয়া হয়েছিল সব ধরনের আমদানি পণ্যের এফসিএল কনটেইনার। এতেই বন্দরের ভেতরে জায়গা খালি হয়েছিল এবং জাহাজ থেকে বন্দরে কনটেইনার নামানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এবারও দেরি না করে আসন্ন ঈদের ছুটির আগেই বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এনবিআরকে দ্রুত এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে নির্ধারিত সময়ে কনটেইনার ডেলিভারি না নিলে চারগুণ স্টোর রেন্ট আরোপ করা আছে। অফডকে কনটেইনার পাঠানো হলে সেই চারগুণ স্টোর রেন্ট থেকে ব্যবসায়ীরাও রক্ষা পাবে। খরচের চাপ বরং কমবে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বাণিজ্যের স্বার্থে ও আমদানিকারকদের দ্রুত পণ্য ডেলিভারি দিতে হলে এর বিকল্প রয়েছে বলে মনে করি না। কারণ অতীতের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তাই সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করা সমীচিন হবে না।
পোশাক পণ্য জুনের মধ্যে জাহাজীকরণ সম্ভব না হলে মার্কিন শুল্কের আওতায় পড়বে
মো. রাকিবুল আলম, প্রাক্তন সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি
এমনিতেই দেশের এক কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যেখানে কোনভাবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই চলছে, সেখানে গার্মেন্টস পণ্য প্রস্তুত করেও নির্ধারিত সময়ে জাহাজে তোলা যাচ্ছে না। আমাদের গার্মেন্টস পণ্য না নিয়েই বন্দর ছেড়ে যেতে হচ্ছে জাহাজকে। তার কারণ কী? কনটেইনার পরিবহনকারী গাড়ি চালক হেলপারদের দাবি আদায়ের আন্দোলন। বিভিন্ন ডিপোতে গার্মেন্টস রপ্তানি পণ্য গিয়ে কনটেইনার ভরে পড়ে রয়েছে। কিন্তু চালকেরা গাড়ি না চালানোর কারণে বিদেশি বায়ারের পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়নি এবং জাহাজেও ওঠেনি। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে।
শুধু তাই নয়, কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতি, অফডকে পরিবহন ধর্মঘট, স্টোর রেন্টের হুঙ্কারেও অপ্রতুল ডেলিভারি ইত্যাদি কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে যে কনটেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে তাতে যদি সময়ের মধ্যে রপ্তানি গার্মেন্টস পণ্য জাহাজে তুলে দেওয়া না যায় এবং ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে আমেরিকা না পৌঁছায় তাহলে আমরা মার্কিন শুল্কের আওতায় পড়ে যাব। তখন পুরো অর্ডারই ঘাড়ের ওপরে এসে পড়বে। কারণ বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল তা ৩ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। যা আগামী ১৩ জুলাই শেষ হবে। এই ডেডলাইন আমাদের মাথায় রাখতে হয়।
এতো সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও যখন পণ্য বন্দরে নেওয়া যায় না তখন কপালের দোষ দেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। দেশের স্বার্থ কেউ বুঝতে পারছে না। গার্মেন্টস রপ্তানি পণ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা যদি সকলে বুঝতো তাহলে এই আন্দোলনের জন্য গর্মেন্টস পণ্য আটকে থাকতো না।
তাই দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দরের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার বিষয়ে অনুরোধ রইলো।
আন্দোলনের নামে বন্দর অচল করে রাখার সুযোগ বন্ধে সংস্কার চাই
সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন
দেশের লাইফ লাইন চট্টগ্রাম বন্দর। আর সেই বন্দরকেই বন্ধ রেখে দাবি আদায়ের নামে যে অপসংস্কৃতি চলছে তা বন্ধ করতে সংস্কার প্রয়োজন। দেশের বর্তমান সংস্কারের মধ্যে এটিই প্রাধান্য পাওয়া উচিত। বন্দরের থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের কিছু জড়িত। অথচ পরিবহন শ্রমিকরা তাদের নিয়োগপত্রের মতো বিষয় নিয়ে কনটেইনার পরিবহন বন্ধ করে দেয়। এতে রপ্তানি পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ কনটেইনার না নিয়েই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ ছেড়ে যেতে হয়। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে। এনবিআর কর্মকর্তারা তাদের দাবি আদায়ে দেশের রাজস্ব আয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ রাখে। তারা সবাই জানে বিষয়টি দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এমন যেনে শুনে এই কাজ করার সুযোগ বন্ধে আইনের মাধ্যমে সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ যে ক্ষতি ইতিমধ্যে হয়েছে তা ওভারকাম করতে অনেক বেগ পোহাতে হবে।
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দর নিয়ে এমন আইন করা উচিত যাতে কোন সংস্থা, কোন সংগঠন দাবি আদায়ের জন্য বন্দরের কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। এটাই হওয়া উচিত। দেশের যেসব বিদেশি জাহাজ আসে তারা আমাদের এমন সব উদ্ভট কর্মকাণ্ড কোনভাবে মানিয়ে নিতে পারে না। যা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করে এবং বিদেশিদের চট্টগ্রাম বন্দর বিমুখ করে। সেই সাথে দিনের পর দিন জাহাজ অপেক্ষায় থাকার কারণে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টিতো রয়েছেই।
কলম বিরতির পর ঈদের লম্বা ছুটি চাপ বাড়াবে বন্দরে
খায়রুল আলম সুজন, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়োর্ডার্স এসোসিয়েশন ও পরিচালক, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন
চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে পণ্যের জট এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একটি জাতীয় দৈনিকের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরের বহিঃনোঙরে প্রায় ২৪ হাজার কনটেইনার নিয়ে ১৭টি জাহাজ অপেক্ষমাণ রয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- এই সংখ্যার মধ্যে খোলা পণ্য পরিবহনকারী ব্লাক জাহাজগুলোর হিসাবই উঠে আসেনি, যা বাস্তব সংকটকে আরও গভীর করে তোলে।
এই অচলাবস্থার পেছনে রয়েছে একাধিক স্তরের সংকট। দীর্ঘদিন ধরে প্রাইম মুভার (লং ভেহিকেল) চালকরা বিভিন্ন দাবিতে দফায় দফায় ধর্মঘটের মাধ্যমে দেশের বেসরকারি ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো থেকে পণ্য পরিবহন কার্যত বন্ধ রেখেছিলেন। এর পরিণতিতে আমদানি ও রপ্তানি, উভয় কার্যক্রমেই গুরুতর বিঘ্ন ঘটে।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছিলো কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তাদের প্রায় ১০ দিনের কলম বিরতি। ফলে শুল্ক-প্রক্রিয়া অনেকটাই ধীর হয়ে যায়। ১০ মার্চ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত কনটেইনারের ‘ফ্রি টাইম’ শেষে স্টোর রেন্ট চার গুণ বাড়িয়ে দেয়, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল আমদানিকারকদের দ্রুত পণ্য খালাসে উৎসাহ দেওয়া। কিন্তু বাস্তবে অনেক জটিলতার কারণে বন্দরের এই উদ্দোগ অনেকের কাছে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর ফলে আমদানিকারকরা আর্থিকভাবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা ও সরবরাহ-অনিশ্চয়তা। সামনে ঈদ-উল-আজহার দীর্ঘ সরকারি ছুটি, এই সময়টি পণ্য সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে কোরবানির মৌসুমের জন্য প্রয়োজনীয় মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জাহাজ বিলম্বে বন্দরে পৌঁছানোয় এবং খালাস প্রক্রিয়ার ধীরগতির কারণে এসব পণ্য সময়মতো বাজারে পৌঁছানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল না পাওয়ায় উৎপাদন বিঘ্নের আশঙ্কায় রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমদানিকারকদের ওপর চাপছে শিপিং কোম্পানিগুলোর ডেমারেজ চার্জ অর্থাৎ, কনটেইনার থেকে দেরিতে পণ্য খালাসের জন্য আরোপিত ফি। সকল ধরনের অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা শেষ পর্যন্ত গিয়ে পড়ছে সাধারণ জনগণের কাঁধে মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে।
দীর্ঘ ছুটির এই সময়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। পণ্য খালাসের হার কমে যাবে, কারণ পর্যাপ্ত যানবাহন পাওয়া যাবে না, অনেক প্রস্তুত পোশাক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, ব্যাংকসহ পণ্য খালাসে জড়িত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানও ছুটিতে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে বন্দর কিভাবে চাপ সামাল দিবে সে ভাবনাতেই শিহরিত হতে হই।
বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ। বাস্তবভিত্তিক নীতিনির্ধারণ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কার্যকর সংলাপ ছাড়া এই জট কাটানো সম্ভব নয়, বরং বিলম্বে তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
পূর্বকোণ/পিআর