উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরতে প্রতিবছর ৪০ হাজার ১১০ মেট্রিকটন প্লাস্টিক জাল ব্যবহার করা হয়। এরমধ্যে ২ হাজার ৭৪০ মেট্রিকটন প্লাস্টিক জাল ফেলে দেওয়া হচ্ছে সাগরে। এই পরিত্যক্ত জাল বা ‘ভূতুড়ে জাল’ সামুদ্রিক প্রাণীগুলোর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমুদ্রবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, অর্থনীতি বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের একদল গবেষকের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্লাস্টিক ফ্রি রিভার্স এন্ড সিজ ফর সাউথ এশিয়া প্রকল্পের আওতায় ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেজ ও সাউথ এশিয়া কো-অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম এই গবেষণার তত্ত্বাবধান করে।
গবেষণায় উঠে এসেছে-কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ২-৭ মিটার পলিথিন স্তর তৈরি হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে-চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিবছর দুই লাখ ৫৭ হাজার ৯১৩ মেট্রিকটন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ২৭ শতাংশ বা ৭০ হাজার ৮৩৩ মেট্রিকটন প্লাস্টিক সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে নালা-নর্দমা এবং কর্ণফুলী নদীতে জমা হয়ে ভয়াবহ দূষণের সৃষ্টি করছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখতে বাংলাদেশের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি। আর এই ব্যবস্থাপনায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্লাস্টিক অপচনশীল অবস্থায় দীর্ঘদিন পরিবেশে থেকে যায়, বাড়ায় দূষণ। তবে অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশে প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় তা পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
এমন বাস্তবতায় দেশে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস উদযাপিত হতে যাচ্ছে আজ। প্রতিবছরের মতো এবারও ২২ মে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি উদযাপন করতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার ও বন্য প্রাণীর সংকটাপন্ন অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দিবসটির লক্ষ্য।
বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবসটির সূচনা হয় ১৯৯২ সালে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৯৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস হিসেবে উদযাপন করা হলেও ২০০১ সাল থেকে এটি প্রতিবছর ২২ মে উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে-হারমোনি উইথ ন্যাচার এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট।
পূর্বকোণ/ইবনুর