চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চমেকের ল্যাবে মার্চ-জুন পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার তথ্য

৩৩ শতাংশ রোগীর নমুনায় অকার্যকর এন্টিবায়োটিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ নভেম্বর, ২০২৩ | ৩:৫০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ শতাংশ রোগীর এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স (অকার্যকর) পাওয়া গেছে। গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চমেকের মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবে রোগীদের রক্ত, পুঁজ, কফসহ বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষায় এ তথ্য উঠে আসে। যেখানে হাসপাতালে ভর্তি এবং বহির্বিভাগের রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

 

মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স হওয়া ৩৩ ভাগের মধ্যে ৭৫ ভাগই ছিল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী।  এসব রোগীর সবচেয়ে বেশি জীবাণুরোধী প্রতিরোধ পাওয়া গেছে ক্লেবসেইলা এবং এসিন্যাটোব্যাকটার নামক দুটি ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে। এদের মধ্যে সাধারণত বাজারে ব্যবহৃত হয় এমন বিভিন্ন  এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া ছিল অনেক বেশি।

 

চিকিৎসকরা বলছেন, এন্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতারোধে শুধুমাত্র মানুষের সচেতনতাই যথেষ্ট নয়, এজন্য চিকিৎসকদের পাশাপাশি ফার্মাসিউটিকেল সেক্টর, গবাদি পশু প্রতিপালনকারী, মৎসখামারী, কৃষকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। চমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাবরিনা শারমীন বলেন, প্রতি তিনমাসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া রোগীদের নমুনা পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত রোগীদের নমুনা কালচার পরীক্ষা করে ৩৩% রোগীর জীবাণুর মধ্যে রেজিস্টেন্স পাওয়া গেছে।

 

ডা. সাবরিনা শারমীন আরও বলেন, শরীরকে জীবাণুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে শরীরে জীবাণুর আক্রমণকে প্রতিহত করা হয়। সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাবার জন্য চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন দিয়ে থাকেন। কিন্তু আমাদের দেশে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়াও এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে রোগ-জীবাণু এন্টিবায়োটিকে আর ধ্বংস হচ্ছে না।

 

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও উচ্চফলনের লক্ষ্যে গবাদি পশু, মাছ চাষে কিংবা কৃষিকাজে গত শতাব্দী থেকে বিশ্বজুড়ে এ জীবাণুরোধী ওষুধের ব্যবহার বেড়েছে। যার ফলে সুস্থ মানবদেহে এসব জীবাণুরোধী ওষুধ খাবারের মাধ্যমে ঢুকে যায়। এতে জীবাণু প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও ডোজ থাকে না।

 

চমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রিপন বড়ুয়া বলেন, এসব এন্টিবায়োটিক ও জীবাণুরোধী ওষুধ যেসব জীবাণুকে মারতে পারে, সেসব জীবাণু শরীরে কিংবা পরিবেশে আগে থেকেই জীবাণুরোধী ওষুধ সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যায়। এর ফলশ্রুতিতে জীবাণুর শরীরে মিউটেশনের মাধ্যমে জীবাণুরোধী ওষুধের বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থা জন্ম নেয়। এভাবে বাংলাদেশে অনেক ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়েছে। এই অবস্থার সবচেয়ে খারাপ দিক হলো দেশে অনেক রোগীরই এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স বা জীবাণুরোধী ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাচ্ছে।

 

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট