কক্সবাজারের পেকুয়ায় সম্পত্তির বিরোধের জেরে ছোট দুই ভাইয়ের মারধরে বড় ভাইকে হত্যার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের ষাটদুনিয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বড় ভাই মুহাম্মদ মামুন (৫৪) অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। তিনি ওই এলাকার মৃত আমির হামজার পুত্র। পুলিশ রাতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমির হামজার ছেলে মোজাম্মেল ও মমতাজুল ইসলামের সঙ্গে তাদের আপন বড় ভাই সেনাবাহিনীর অবসারপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মুহাম্মদ মামুনের জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলছিল। গতকাল শনিবার সকালে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য জমি পরিমাপ করেন। এ সময় তিন ভাইয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে মোজাম্মেল ও মমতাজ মিলে তাদের বড় ভাই সাবেক সেনাসদস্য মামুনকে মারধর করে গুরুতর আহত করে সড়কে ফেলে রেখে সটকে পড়েন।
নিহত সেনা সদস্য মামুনের স্ত্রী পাপিয়া সরওয়ার আরভি বলেন, ‘সকাল ১১টার দিকে মামুন আমার মোবাইলে কল দেয়। মেয়ে ইশরাত জাহান মায়া কল রিসিভ করলে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তাকে মোজাম্মেল ও মমতাজ ব্যাপক মারধর করে রাস্তায় ফেলে রাখে। আমাকে তোমরা বাঁচাও। আমি মরে যাব। প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও তারা শোনেনি। হাতুড়ি দিয়ে, লাথি, কিল-ঘুষি মেরে আমাকে আঘাত করেছে। আমরা বান্দরবান থেকে বাড়িতে এসে দেখি আমার স্বামী মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে। আমরা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। শরীরের অবস্থা একটু ভালো লাগলে রাতে মামুনকে বাড়িতে নিয়ে যাই। কিন্তু রাত ১০টার দিকে মামুনের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বুকের যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকলে আমরা ফের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়ে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে পড়া লেখার সুবাধে আমি সেখানে থাকি। মামুন মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসেন। আমাদের জমি জোর করে মোজাম্মেল ও মমতাজ জবর দখল করে রাখে। জমির খাজনাও দিচ্ছে না। এনিয়ে মামুনের সঙ্গে তার ভাইদের বিরোধ। তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমার সন্তানদের এতিম করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত মমতাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। সংযোগ বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মুজিবুর রহমান বলেন, বিকেলে মারপিটের আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসা দেওয়ার পর ভালো লাগলে তারা চলে যায়। পরে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, আমরা শুনেছি মারপিটে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মারা যাওয়ার খবর শুনে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।
পূর্বকোণ/পিআর/পারভেজ