টেকনাফ থেকে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারকালে ২১৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। এসময় ১২ দালালকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১১৮ জন পুরুষ, ৬৮ জন নারী ও ২৮ জন শিশু রয়েছে। তারা সকলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
গ্রেপ্তার দালালরা হলেন- টেকনাফের বাহারছড়া কচ্ছপিয়া মৃত সমসু মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (২২), হ্নীলা নাটমুরাপাড়া আমীর হোসেনের ছেলে জসিম (২২), উখিয়ার জালিয়াপালং ডেইল পাড়া কামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৮), উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পের মো. ইয়াছিনের ছেলে ধলু মিয়া (২৯), মৃত হোসেনের ছেলে ইমাম হোসেন (৩৮), মৃত আমিন উল্লাহর ছেলে মো. আলম (২৫), মৃত আবুল নসরের পুত্র ওমর ফয়সাল (৩৭), মৃত আবদুরের ছেলে মহিব উল্লাহ (৩০), মো. ইদ্রিসের ছেলে মো. রফিক (২০), রশিদ আহমদের ছেলে মো. আরিফ (২০), মো. হোসনের ছেলে মো. জোহার (৩০) ও মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে সেলিম উল্লাহ (৩৯)।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমের ৪৪ নটিক্যাল মাইল দূরবর্তী সাগরে এ অভিযান চালানো হয়। নৌবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গত সোমবার মধ্যরাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর উপকূল দিয়ে ‘এফবি কুলসুমা’ নামের একটি ট্রলারে করে ২১৪ রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। মঙ্গলবার দুপুরে ট্রলারটি সেন্টমার্টিন উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এ সময় নৌবাহিনীর ‘বানৌজ দুর্জয়’ জাহাজের সদস্যরা ট্রলারটির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে করে থামার নির্দেশ দেন। কিন্তু ট্রলারটি পালানোর চেষ্টা করে। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে ট্রলারটি আটকাতে সক্ষম হন।
জিজ্ঞাসাবাদে ট্রলারে থাকা রোহিঙ্গারা জানান, তারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। তারা সকলে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা বলে জানান। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনে নিয়ে যান এবং সেখানে হস্তান্তর করেন।
কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশীদ তানভীর জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের নৌবাহিনীর সদস্যরা কোস্ট গার্ডের জিম্মায় হস্তান্তর করেন। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার রোহিঙ্গাদের পরবর্তীতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় গতকাল থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর