৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয় করে মাঝ পথে কাজ বন্ধ হয়ে থমকে যায় ফটিকছড়ি রোসাংগিরীর নিশ্চিন্তপুর সেচ উপ-প্রকল্পের কাজ। গত ২০ বছরে উক্ত প্রকল্পের কোন কাজ হয়নি, বরং যতটুকু কাজ হয়েছে তা ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে। ২০০১ সালে রোসাংগিরী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে হালদার পাড়ের সাথে লাগোয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নিশ্চিন্তপুর সেচ উপ-প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০০১ হতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ চলমান ছিল। সূত্র মতে, ১৯৯৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ওই প্রকল্পের কাজের অনুমোদন হয়। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। ২০০১ সালে কাজ ধরা হয়। ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি পাম্প হাউস, ২ কি.মি একটি সেচ খাল, কালভার্ট ও ফুট ব্রিজ ৫টিসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। গত ২০ বছর ধরে প্রকল্পটির কাজের বিন্দুমাত্র অগ্রগতি নাই। অপরদিকে প্রকল্প বাতিলও হচ্ছে না। রয়েছে দোদুল্যমান পর্যায়ে। ফলে এটি এখন গলার কাটায় পরিণত হয়েছে স্থানীয় কৃষক ও জনসাধারণের কাছে। সূত্র মতে, ২০২০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পের কাজ কেন বন্ধ হলো, সমস্যা কি জানতে ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে সমীক্ষা করান। সমীক্ষার প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ ছিল, বাজেট বাড়িয়ে এই প্রকল্পটি নতুন করে নিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আশার কথা হলো পানি উন্নয়ন বোর্ড ফটিকছড়িতে যে ক’টি সেচ প্রকল্প করার উদ্যোগ নিয়েছে তার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিন্তপুর সেচ প্রকল্প আগে করা হবে বলে জানা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, সুবিশাল পাম্প হাউসটির চার দেওয়াল ছাড়া সবকিছুই চুরি হয়ে গেছে। সেচ খালটি ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে যাচ্ছে, প্রচুর ঝোপ জঙ্গলে ভরা সেচ খালের ইট নিয়ে যাচ্ছে চোরের দল। সম্পূর্ণ অরক্ষিত প্রকল্পটি যতটুকু কাজ হয়েছে তার সবটুকুই ধ্বংসের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে।
এদিকে, সেচ প্রকল্পটি চালু হলে উপজেলার তিন ইউনিয়ন যথাক্রমে রোসাংগিরী, সমিতিরহাট ও নানুপুরের হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবে। কয়েক হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে। কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে। বিশেষ করে রোসাংগিরীর প্রায় ৩ বর্গ কিলোমিটার জমির উপর করা বাঙ্গি-তরমুজ চাষিরা খুবই উপকৃত হবে এবং পানির সুবিধা পেলে এ চাষের প্রসার বাড়বে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহাম্মদ সোহাগ তালুকদার জানান, বিভিন্ন কারণে উক্ত সেচ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। যেহেতু অধিগ্রহণ করাই আছে, সেহেতু এটির কাজ ধরা হবে। ফটিকছড়িতে ৫টি উপ-সেচ প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করা হবে। তারমধ্যে নিশ্চিন্তপুর সেচ প্রকল্পকে আগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে এর জন্য স্থানীয়দের একটি চাহিদা পত্র আমাদের দিতে হবে।
পূর্বকোণ/পিআর